‘ড্রাই আই’ সমস্যায় ভুগছেন বাংলাদেশি গার্মেন্টস শ্রমিকেরা: গবেষণা
অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা, অনুপযুক্ত কাজের পরিবেশ এবং হতাশাসহ নানা সমস্যার কারণে বাংলাদেশের অনেক গার্মেন্টস শ্রমিকের চোখের পানির গুণগত মানের পরিবর্তন (ড্রাই আই) হচ্ছে বলে সুইজারল্যান্ডের পিয়ার রিভিউড জার্নাল এমডিপিআইতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশি গবেষক ডা. একেএম মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশিসহ মোট চারজন বিশেষজ্ঞ এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গাজীপুরের ১ হাজার ৫০ জন শ্রমিকের তথ্য সংগ্রহ করে মারাত্মক ড্রাই আইয়ের রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩.৮ শতাংশ নারী।
ফলাফলে দেখা গেছে ৬৪. ২ শতাংশেরই ড্রাই আই সমস্যা আছে!
যেকোনো গবেষণার জন্য পিয়ার রিভিউড (স্কলারলি বা রেফারিড) জার্নাল খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানে বিশেষজ্ঞদের যেসব আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়, তা প্রকাশিত হওয়ার আগে এই বিষয়ের একাধিক বিশেষজ্ঞ (রেফারি হিসেবে যারা কাজ করেন) বার বার পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এই ধরনের জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেলকে ‘সর্বোচ্চ’ মানের ধরা হয়।
গাজীপুরের শ্রমিকদের এমন অবস্থা হলেও সারা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একই চিত্র পাওয়া যাবে কি না সে বিষয়ে অবশ্য নিশ্চিত নন গবেষকেরা।
মামুনুর রশীদ সোমবার এ বিষয়ে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা একটি অঞ্চলের, একটি পরিবেশের ডেটা সংগ্রহ করেছি। অন্য পরিবেশে ভিন্ন ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।’
‘যে পরিবেশে শ্রমিকেরা কাজ করছেন, সেটি চোখের পানির গুণগত মান পরিবর্তনে প্রভাব ফেলছে। ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হয় অনেকের, ঘুম কম হয়। এরপর তারা আবার সেলাইয়ের কাজ করছেন। তাতে চোখের ওপর চাপ পড়ে।’
ড্রাই আই কী: চোখ শুকিয়ে খটখটে। মনে হয় কিছু একটা চোখে পড়েছে। কখনো চুলকায়। আলো লাগলে আরও বেশি যেন খচখচ করে। এই সমস্যার নাম ড্রাই আই সিনড্রোম বা শুষ্ক চোখ। চোখের ওপর চোখের পানির একটা পাতলা আস্তরণ আছে। জল, তেল, পিচ্ছিল মিউকাস আর জীবাণুরোধী অ্যান্টিবডি দিয়ে তৈরি এই চোখের পানি। চোখের গ্রন্থি থেকে কোনো কারণে এই পানি নিঃসরণ কম হলে চোখ শুষ্ক হয়ে পড়ে। তখনই এসব সমস্যা দেখা দেয়।
চোখের শুষ্কতার চিকিৎসায় শুরুতেই কারণ নির্ণয় করা দরকার। চিকিৎসা না করা হলে এ থেকে প্রদাহ হতে পারে। হতে পারে আরও নানা ধরনের সমস্যা।