মায়ের মুক্তি চাইলো পাঁচ সন্তান
মিথ্যা মামলায় মা নূরজাহান বেগম কারাগারে। আর বাবা পলাতক। নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে পাঁচ সন্তানের। তাই মায়ের মুক্তি ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে পাঁচ সন্তান।
সোমবার (৩১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন সন্তানরা।
মানববন্ধনে নূরজাহানের বড় মেয়ে শারমিন আক্তার বলেন, শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী ছালাম ব্যাপারী ও তার স্ত্রী শিউলী বেগম আমাদের মারধর করে। এরপর আমার মা-বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে। সেই মিথ্যা মামলায় পুলিশ আমার মাকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। মা বিনা দোষে হাজত খাটছেন। বাবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বাদীরা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। ভয়ে ঘর থেকে এলাকায় বের হতে পাচ্ছি না। ছোট ছোট ভাই-বোনদের নিয়ে ঘরবন্দি আছি। ভয় ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি আমরা।
তিনি বলেন, আমার মা বিনা অপরাধে জেলে। তাই মায়ের মুক্তি ও ষড়যন্ত্রকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ সময় নূরজাহান বেগমের মেয়ে শারমিন আক্তার (২২), সাথী আক্তার (১৯), বিথী আক্তার (১৭), ছেলে মুজাম্মেল ছৈয়াল (১০) ও মজনু ছৈয়াল (০৮) উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ভূমখাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নাসিমা বেগম, রোকেয়া বেগম, রবিন ও সেন্টুসহ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, নড়িয়ার ভূমখাড়া গ্রামের বাসিন্দা নূরজাহান বেগমের স্বামী ইয়াছিন ছৈয়াল চট্টগ্রামে ফেরি করে কাপড় বিক্রি করেন। চার সন্তান নিয়ে নূরজাহান গ্রামের বাড়িতে থাকেন। ৩ আগস্ট নুরজাহানের ছেলে মজনু (৯) ও মোজাম্মেলের (৮) সঙ্গে প্রতিবেশী ছালাম ব্যাপারীর ছেলে আব্দুল আহাদের (১৪) ঝগড়া হয়। এ সময় হাতাহাতি করলে আহাদ মাথায় আঘাত পায়। ওই ঘটনার জের ধরে ওই দিন আহাদের বাবা আব্দুস সালাম লোকজন নিয়ে মজনু, মোজাম্মেল, তাদের মা নূরজাহান, দুই বোন বিথী ও সাথীকে মারধর করেন।
এ ঘটনা উল্ল্যেখ করে ওই দিন রাতেই নূরজাহান বেগম নড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগটি নথিভুক্ত করেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় কিছু ব্যক্তি বিষয়টি মিমাংসার জন্য নুরজাহানকে চাপ দিতে থাকেন। নুরজাহান মিমাংসায় রাজি না হলে ২১ আগস্ট ছালাম ব্যাপারীর স্ত্রী শিউলী বেগম নড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয় নূরজাহান ও তার স্বামী ইয়াছিন ছৈয়াল আব্দুল আহাদের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন। ওই রাতেই নড়িয়া থানার পুলিশ নূরজাহানকে গ্রেফতার করে। পরদিন তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে জেলে আছেন নূরজাহান বেগম।