ইসরায়েলকে বয়কট আইন বাতিল করল আমিরাত

0

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ইসরায়েলকে অর্থনৈতিকভাবে বয়কটের একটি আইন বাতিল করে ডিক্রি জারি করেছেন। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক লেনদেনে অনুমোদন দেওয়ার এ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আমিরাতে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ১৩ আগাস্ট দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে একটি ‘ঐতিহাসিক চুক্তিতে’ উপনীত হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েল। যার ফলে ফিলিস্তিন ইস্যু থেকে শুরু করে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধসহ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় ধরনের অদল বদলের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। 

তারই ধারাবাহিকতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট ইসরায়েল বয়কটের চুক্তিটি বাতিল করলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আমিরাতের বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএম বলেছে, “দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃ্দ্ধিকে চাঙ্গা করা ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বয়কট আইনটি বিলুপ্ত করে ডিক্রি জারি করেছেন।”

শনিবার আমিরাতের প্রেসিডেন্টের জারি করা ডিক্রির অর্থ হচ্ছে, এখন থেকে দেশটির নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায় আর বাধা নেই। খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের এ ডিক্রিকে স্বাগত জানিয়েছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবি আশকেনাজি বলেছেন, “শান্তির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। যার মাধ্যমে দুই দেশের জনগণ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সফলতা লাভ করবে, যা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকেও জোরদার করবে।”

প্রথমবারের মতো তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর থেকে আমিরাতের রাজধানী আবু ধাবিতে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান এল আল ইসরায়েল এয়ারলাইন্স লিমিটেডের সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতির মধ্যেই খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ইসরায়েলকে বয়কটের আইন বাতিল করলেন।

সোমবার আমিরাতে যাওয়ার কথা থাকা এল আল ইসরায়েল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটিতে দেশটির সরকারের একটি প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি জ্যারেড কুশনারসহ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কয়েকজন উপদেষ্টাও থাকবেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সময় বাঁচাতে ফ্লাইটটি সৌদি আরবের আকাশসীমা ব্যবহার করে যাবে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।

১৩ অগাস্ট আমিরাত ও ইসরায়েল যে ‘ঐতিহাসিক চুক্তিতে’ সম্মত হয়েছে, তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর হওয়ার আগে একে অপরের দেশে দূতাবাস খোলা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভ্রমণ সংক্রান্ত নানা বিষয়ের বিস্তারিত নিয়ে উভয়পক্ষতে একমত হতে হবে।

ইসরায়েলের চ্যানেল ১৩ টিভি জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ‍দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বছরে ৪০০ কোটি ডলারের বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যেই এই সংখ্যা তিন থেকে চারগুণ হবে বলেও মনে করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েল সরকারের কর্মকর্তারা চ্যানেল ১৩-র এই হিসাব নিশ্চিত করতে পারেননি।

দেশটির কৃষিমন্ত্রী অ্যালন শুস্টার বলেছেন, তার দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে পানির লবনাক্ততা দূর ও মরুভূমিতে শস্য উৎপাদনের কয়েকটি সম্ভাব্য প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। এসব প্রকল্প তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশটির খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতিতে সহযোগিতা করবে।

“তাদের অর্থ এবং আমাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা অনেকদূর যেতে পারবো,” শুক্রবার তেল আবিবের রেডিও এফএম ১০২-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন শুস্টার।

দুই দেশের কর্মকর্তারা একে অপরের সঙ্গে প্রতিরক্ষা, ওষুধ, পর্যটন ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিনিময়ের দিকেও তাকিয়ে আছেন বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন তিনি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com