‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অযোগ্য লোকদের দ্রুত সরানো জরুরি’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অযোগ্য লোকদের দ্রুত সরানো জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ডা. আব্দুন নূর তুষার। তিনি বলেন, এসব অপদার্থ, অযোগ্য লোকদের দ্রুত দুর করে যোগ্য লোকদের পদায়ন করা জরুরি।
আব্দুন নূর তুষার বলেন, আক্রান্তের যে সংখ্যাটা বলা হচ্ছে এটাতে গলদ আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি বেসরকারি সংস্থাকে শনাক্তের জন্য দিয়েছিলো। জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা (জেকেজি) নমুনা নিয়ে ফেলে দিয়েছে। ফলে যে সংখ্যাটা তাতে গলদ আছে। আমরা যে সংখ্যাটা পাচ্ছি এটা ভুল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এসব অপদার্থ, অযোগ্য লোকদের দ্রুত দূর করবেন। যোগ্য লোকদের পদায়ন করাও জরুরি।
তারা বলছে, এসব রোগীদের ফের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এই যে ভোগান্তি হলো। এটার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন? এই রোগীর সংখ্যা ও রোগীদের নিয়ে কোন গবেষণা হয় সেটাও প্রশ্নবিদ্ধ।
ডা. সায়ন্থ বলেন, শুরুর দিকে শুধু মাত্র আইইডিসিআর-এ পরীক্ষা করা হলো। সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অন্য কোন ল্যাবকে পরীক্ষা করতে দেয়া হলো না। সকলেই জানেন, এই করোনা আমাদের দেশে ধেয়ে আসছে। ৩ মাস সময় পেলো তারপরেও কেন কিটের অপ্রতুলতা থাকবে। কেন এখানো নমুনা পরীক্ষা কম হবে। চীনের উহান থেকে এই ভাইরাসটি আসতে ৩ মাস সময় লেগে গেলো সেখানে তারা বলছে, আমাদের সকল ধরণের প্রস্তুতি আছে। উন্নত দেশের থেকে তারা প্রস্তুত।
ডা. তুষার চিকিৎসকদের বিষয়ে বলেন, অধিকাংশ হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার নার্স নাই। তারা এখন দফায় দফায় ডাক্তার নার্স নিচ্ছে। আমাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অযোগ্য ব্যবস্থাপনা দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। যার ফলে ডাক্তার নার্সরা আক্রান্ত হচ্ছেন। একটা হ য ব র ল পরিস্থিতি চলছে। এই অদক্ষতাকে দুর করতে না পারলে ভবিষ্যৎে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশের ডাক্তাররা অত্যন্ত যোগ্যতার মোকাবিলা করতে পেরেছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। আমাদের যখন রোগী মৃত্যুর হার বলা হয় অনেক কম। কিন্তু তখন কিন্তু তারা এই কথাটা বলেন না বাংলাদেশের ডাক্তারদের মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি।
তিনি আরও বলেন, আমরা পুকুর কাটা দেখার দেখার জন্য সরকারি কর্মকর্তাকে বিদেশ যেতে দেখেছি। আমাদের কর্মকর্তাদের উহান যাবার প্রয়োজন ছিলো। উহান না যাক পাশের কোন শহরে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে আসা প্রয়োজন ছিলো। ডাক্তারদের অবস্থা বাদশা আকবরের বিড়ালের মতো। তারা বিড়াল বা কুকুরকে খাওয়ানোর কারণে অনেক বার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে। সেই রকম অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ডাক্তারদের পাঠিয়েছে। আক্রান্ত হলে ডাক্তাররা হোক। হাজার কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। আর তারা নমুনা সংগ্রহের জন্য লোকবল সংগ্রহ করতে পারেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ) উদ্দেশ্যে ডা. তুষার বলেন, তিনি মানহীন মাস্ক পড়ে সামনে এসেছে। তাহলে জাতিকে কী শিক্ষা দেবেন। তিনি নিজে আক্রান্ত হলেন। তিনি চিকিৎসা নিতে গেলেন সিএমএইচ’এ। নিজের নিয়ন্ত্রিত কোন হাসাপাতালে যেতে পারেননি। কারণ তিনি জনেন তিনি মানহীন হাসপাতাল নির্মাণ করে রেখেছেন। গত ৬ মাসেও তিনি কোন হাসপাতাল পরিদর্শন করেন নাই। তিনি যখন হাসপাতালে ক্যানোলা নিয়ে শুয়ে ছিলেন তখন আমাদের ডা. গোলাম কিবরিয়া সিএমএইচ’এ একটা বেডের জন্য হাহাকার করছে। তার উচিত ছিলো নিজের বেড ছেড়ে দিয়ে কিবরিয়া স্যারকে সেখানে ভর্তি করা। এই যোগ্যতাও নাই, হৃদয়ও নাই। মিথ্যুক যখন কাজে যায় তখন টাকা নয়ছয় হয়। জেকেজি তারা পুলিশের কাছে গিয়ে ইয়াবা চেয়েছে। এদের যতই দায়িত্ব দেয়া হোক তারা ভালো কিছু করতে পারবেনা। এই মহাপরিচালক একবার কোন করোনা রোগীকে দেখার জন্য হাসপাতালে যায়নি। কোন চিকিৎসক মারা যাবার পর শোক প্রস্তাব দেয় নাই। এই মহাপরিচালক উষ্মা প্রকাশ করেছে যখন তার বিরুদ্ধে সমালোচনা হয়েছে। মহাপরিচালক ডাহা মিথ্যা কথা বলেছে, করোনা আক্রান্ত রোগী ১.০৫ (আর নট) জনকে আক্রান্ত করেছ। এই মহাপরিচালকের কোন জ্ঞানও নাই যে আরনট ১.০৫ হলে আর কোন রোগী থাকবেনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে এটি ৩ বছর থাকবে। তার কিছুদিন আগে বলেছেন দিনে ৬৫ হাজার রোগী হতে পারে। তাপমাত্রার কারণে বাংলাদেশে ছড়াবে না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এই লোকের মানসিক সুস্থতা আছে?
জোন ভিত্তিক লকডাউনের বিষয়ে ডা. তুষার বলেন, কিছু লোক আছে বাস থেকে চুলকানির ওষুধ কিনে। সারা বছর ৫/১০ টাকার ওষুধ কিনে। এরপর যখন ক্যান্সার হয় তখন ডাক্তারের কাছে আসে। এই লকডাউন হচ্ছে এইরকম বিষয়। এই লকডাউন কোন কাজেই আসবে না।
ডা. সায়ন্থ বলেন, এই লোকগুলোর আমরা সমালোচনা করছি। কিন্তু এই লোকগুলো কী উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। নাকি এই লোকগুলোকে কেউ এখানে নিয়ে এসে বসিয়েছে। এই অযোগ্যতার কারণে তারা বসে আছেন। কারণ একজন ডিজি বা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দেয়া একদিনের ব্যাপার। সরকারের তরফ থেকে প্রণোদনা, ত্রাণ, টাকা দেয়া হয়েছে সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। যার ফলে ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রি করা বন্ধ করে দেয়া হলো। তাহলে এটা কী চোরের কাছে হার মানা নয়? আমাদের আসলে সিস্টেম ভেঙ্গে পড়েছে। রাজনীতির সিস্টেম দেশে ভেঙ্গে পড়েছে। আগে রাজনীতি ঠিক করেন। নির্বাচন ব্যবস্থা ঠিক করেন। জবাবদিহিতা ঠিক করেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা যদি নিশ্চিত করি তাহলে আমাদের এতা কথা বলতে হতো না।
তিনি আরও বলেন, এখন যদি আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা যদি সঠিকও দেয় তবুও মানুষের বিশ্বাস করবে না। তাদের বিশ্বাসযোগ্য এতটা তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। চিকিৎসকদের প্রত্যেকের যথাযথ পিপিই দেয়া। এটার মান নিশ্চিত করা। এই যে নানামুখী সমস্যার কারণে চিকিৎসকদের মৃত্যু হচ্ছে। এই অবস্থায় সরকার তাদের জন্য কী করেছে? ইমপেরিয়াল কলেজের এক গবেষণায় বলা হয়েছে লকডাউনের কারণে ইংল্যান্ডে ৪ লাখ মানুষের মৃত্যুরোধ করা সম্ভব হয়েছে। সেখানে আমাদের দেশে লকডাউনের নামে সরকার দেয় সাধারণ ছুটি। ঈদের ছুটি দিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়। গার্মেন্টস কর্মীদের একবার যেতে বলে একবার আসতে পারে। সর্বশেষ শুরু হয়েছে লাল হলুদের খেলা। একটা পুকুরের একটা অংশে খাবার দিলে কোন লাভ হবে। শুধুমাত্র সরকারকে তেল দিতে ব্যস্ত কিছু মানুষ যারা মানুষের কথা ভাবেন না সেরকম গুটি কয়েক মানুষ ছাড়া এইভাবে জোনিং করে লকডাউন ফলপ্রসু হবে না। ত্রাণ দিতে বিপর্যয়, ১০ টাকার চাল দলীয় লোক খেয়ে ফেলে। তারা যে জনপ্রতিনিধি তৈরি করেছে তারাতো প্রধানমন্ত্রীরও কথা শোনে না। চিকিৎসকদের নকল পিপিই দেয়া হলো। এন-৯৫ প্যাকেটের ভিতর অন্য জিনিস দেয়া হলো। যারা অভিযোগ করল তাদের বদলি বা শাস্তি দেয়া হলো। কিন্তু যারা এসব করছেন তাদের শাস্তি হলো না।