মিনিয়াপোলিস পুলিশ বিভাগ ভেঙে দেয়ার চিন্তা
যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার জেরে আলোচনায় আসা মিনিয়াপোলিসের স্থানীয় কাউন্সিল সদস্যরা সেখানকার পুলিশ বিভাগই ভেঙে দেয়ার কথা বলেছেন।
মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা এই অঙ্গীকার করেছেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান আন্দোলনের বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় কাউন্সিলের ১৩ জন সদস্যের মধ্যে ৯ জনই শহরে ‘জননিরাপত্তার একটি নতুন মডেলে’র কথা বলছেন।
মেয়র জ্যাকব ফ্রে আগে এ উদ্যোগের বিরোধিতা করে বিক্ষোভকারীদের দুয়ো শুনেছেন।
ওদিকে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের একজন রিপাবলিকান কলিন পাওয়েল বলছেন, সামনের নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পকে ভোটই দেবেন না।
জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে গড়ে ওঠা বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনকে যেভাবে মোকাবেলা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার কঠোর সমালোচনা করে পাওয়েল বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ‘সংবিধান থেকে সরে যাচ্ছেন’।
অবশ্য ট্রাম্পও যথারীতি এর জবাব দিয়ে পাওয়েলকে ‘অত্যন্ত অতিমূল্যায়িত’ বলে খোঁচা দিয়েছেন।
কলিন পাওয়েল সম্ভবত একমাত্র আফ্রিকান আমেরিকান যিনি যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান ছিলেন।
বিক্ষোভ দমনে আর্মি নামানোর যে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প দেশটির সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে তাতে সর্বশেষ সংযোজন পাওয়েল।
আফ্রিকান আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েড মিনিয়াপোলিসে পুলিশী হেফাজতে নিহত হন গত ২৫ মে এবং তার মৃত্যুর জের ধরে দেশটিতে তীব্র বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন তৈরি হয়েছে।
রোববার সিটি কাউন্সিলের ১৩ জন সদস্য বিক্ষোভকারীদের সামনে এসে স্থানীয় পুলিশ বিভাগকে ভেঙ্গে দেয়ার অঙ্গিকার করেছেন এবং এর পরিবর্তে জননিরাপত্তায় নতুন মডেল তৈরির কথা বলেছেন, যা সত্যিকার অর্থেই কমিউনিটিকে নিরাপদ রাখবে।
এদিকে, পরিস্থিতি কিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করায় নিরাপত্তামূলক কিছু পদক্ষেপ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
নিউ ইয়র্কে এক সপ্তাহ ধরে চলা কারফিউ তুলে নেয়া হয়েছে এবং ট্রাম্প বলেছেন, ওয়াশিংটন ডিসি থেকে তিনি ন্যাশনাল গার্ডকে তুলে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
কলিন পাওয়েল যা বলেছেন
টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের একটি সংবিধান আছে এবং আমাদের সেটি অনুসরণ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট ক্রমশ তা থেকে দূরে সরছেন।’
সাবেক এই চার তারকা জেনারেল বলেন, ট্রাম্প যেভাবে কথা বলছেন তা আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।
‘আমি নিঃসন্দেহে কোনোভাবেই তাকে সমর্থন করতে পারি না।’
উদারপন্থী রিপাবলিকান হিসেবে পরিচিত পাওয়েল ২০১৬ সালের নির্বাচনেও ট্রাম্পকে সমর্থন দেননি।
ট্রাম্প যেভাবে জবাব দিলেন
টুইটারে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় পাওয়েলকে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে জড়ানোর জন্য দায়ী করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘কলিন পাওয়েল বলেননি ইরাকে মানববিধ্বংসী অস্ত্র আছে? তাদের ছিলো না কিন্তু আমরা যুদ্ধে জড়িয়েছি।’
বিক্ষোভের কী অবস্থা
সহিংস বিক্ষোভ এখন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে রূপ নিয়েছে এবং রোববার কয়েকটি ইউরোপীয় দেশেও প্রতিবাদ হয়েছে।
শনিবার বড় র্যালি হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি, শিকাগো ও সানফ্রান্সিককোতে।
সূত্র : বিবিসি