আবরারের খুনিরা বেঁচে গেলে দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে: আল্লামা কাসেমী
বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের খুনের বিচার না হলে দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে বলে মন্তব্য করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
তিনি বলেন, ‘আবরার ফাহাদের খুনের বিচার না হলে এবং খুনিরা বেঁচে গেলে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে, দেশ আগ্রাসন কবলিত হবে এবং দেশের মানুষ স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা হারাবে। ’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের রুহের মাগফিরাত ও জান্নাতের জন্য বিশেষ দোয়া-মুনাজাত পরিচালনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার জামে মসজিদে এই দোয়া-মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এতে দলের সহ-সভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা মুনির আহমদ, মাওলানা আহসান হাবীব এবং ছাত্র-শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ প্রায় সহস্রাধিক মুসল্লি অংশ নেন।
দোয়ায় আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী দেশ থেকে সব প্রকার দুর্নীতি দূরীকরণ, শান্তি, সুশাসন ও সর্বস্তরে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহর গায়েবি মদত কামনা করেন।
বৃহস্পতিবার পল্টনের জমিয়ত কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব শুক্রবার বাদ জুমা মসজিদের ইমাম-খতিবদের প্রতি আবরারের জন্য বিশেষ দোয়া-মুনাজাতের আহ্বান জানান।
দোয়া-মুনাজাত শেষে জমিয়ত মহাসচিব উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশে বিরাজমান বিশৃঙ্খল ও অরাজক পরিস্থিতি এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তাহীনতা যে কতটা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে, আবরার হত্যাকাণ্ডের পর এটা দেশবাসীর সামনে উন্মুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদী আগ্রাসন এবং বর্তমান দুঃশাসনে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা যে কীভাবে দিন দিন হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে, সেই দিকটাও সবার সামনে ফুটে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে সুদৃঢ় রাখার পাশাপাশি সর্বস্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা ও মানুষের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষে অবশ্যই আবরার হত্যাকারীদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
আল্লামা কাসেমী বলেন, ‘দেশের পক্ষে ফেসবুকে লেখা একটি স্ট্যাটাসের জন্য কাউকে নিজ দেশের মানুষের হাতে এভাবে জীবন দিতে হবে, এটা যেমন কল্পনাতীত; তেমনি গভীর উদ্বেগ ও অশনি সংকেতও বহন করে। এটা কোন দেশ? খুনীদের সরকারি দলের তকমা থাকলেই তারা দেশটাকে হিংস্রতার অভয়ারণ্য বানিয়ে ছাড়ে। আর তাই নির্ভয়ে তারা বিরোধী মত ও পথের মানুষদের অবলীলায় হত্যা করতেও দ্বিধা করছে না। ’
তিনি বলেন, ‘বুয়েটের মতো দেশ বাছাই করা শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই যদি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা না থাকে, তাহলে আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, ভেবে দেখলে সত্যিই হতাশ ও আতঙ্কিত হতে হয়।’
দেশপ্রেমিক সাধারণ ছাত্রসমাজ ও শান্তিপ্রিয় জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে জমিয়ত মহাসচিব বলেন, এই মৃত্যু উপত্যকাকে শান্তিময় করতে আবরার হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে সবাই সোচ্চার শামিল হয়ে দেশবিরোধী সব অপশক্তি ও খুনি চক্রকে উৎখাত করুন।’