এরপরও প্রধানমন্ত্রী কীভাবে বলেন দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেননি?
বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যার দিনটিকে ‘শহীদ আবরার দিবস’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।
তিনি বলেছেন, ‘শহীদ আবরার হত্যার ন্যায়বিচার, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং দেশের জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ হচ্ছে রাজপথ। সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আবরার হত্যার প্রতিবাদ এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগের তাণ্ডবলীলা দেখলে মনে হয় যে বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে কোনো সরকার নাই। গত ১০ বছরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের তাণ্ডবলীলা চরম একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগ অন্যায়ভাবে শত শত কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। ৮৬ কোটি টাকা টেন্ডারবাজির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অপসারণ করা হয়েছে। এই দুই নেতার টেন্ডারবাজির রেশ কাটতে না কাটতেই আমরা দেখতে পেলাম ক্যাসিনো বাণিজ্য আর যুবলীগের অবিশ্বাস্য লুটপাটের চিত্র। এরপর দেখতে পেলাম বুয়েট ছাত্রলীগের রোমহর্ষক টর্চার সেলের ঘটনা।
মওদুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন ভারত সফরে গেলেন আমরা অত্যন্ত আশাবাদী ছিলাম।আমরা ভেবেছিলাম অন্তত তিনি তিস্তা নদীর পানির ব্যাপারে একটি সমঝোতার খবর নিয়ে আসবেন। কিন্তু ফিরে আসার পর অত্যন্ত হতাশ হয়েছি। দশ বছরের বেশি সময় ধরে এই সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আছে। এরপরও আমাদের তিস্তা নদীর ন্যায্য হিস্যার পানি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অর্জন করতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী ভারতকে ফেনী নদীর পানি দিয়ে এলেন। অথচ কোনো জাতীয় স্বার্থ পূরণ করেননি।
তিনি বলেন, আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি এরপরও প্রধানমন্ত্রী কীভাবে বলেন যে, ‘আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ বিকিয়ে দিই নাই।’
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে বেগম জিয়াকে কারান্তরীণ করা হল। এক বছর দুই মাস দাবি করার পর তাকে পিজি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। অথচ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা সম্রাট কারাগারে যাওয়ার দুদিন পরই তাকে ভিআইপি মর্যাদায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বেগম জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, তারপরও তাকে সঠিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। এতেই বোঝা যায়, দেশে দ্বৈতনীতি চলছে।বাংলাদেশের মানুষ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত মানবন্ধনে আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও পেশাজীবী নেতা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল কুদ্দুস, সাংবাদিক নেতা এম আবদুল্লাহ, কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, কৃষকদল নেতা মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।