জলঢাকায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে ত্রাণের মাল ভাগ বাটোয়ারার অভিযোগ!
নীলফামারীর জলঢাকায় কাতার চ্যারিটি দাতা সংস্থার দুস্থ, এতিম ও হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণের মাল বিত্তবানদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম-আহবায়ক ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোকছুদার রহমান লেলিন একক আধিপত্য বিস্তার করে নিজের আত্মীয়স্বজনসহ দলীয় পছন্দের লোকজনদের মাঝে এসব ত্রাণের মাল ভাগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, নাম মাত্র পছন্দের কিছু লোক মাঠে সমাগম ঘটিয়ে বাকি সিংহভাগ ত্রাণ সামগ্রী নিজে এবং দলীয় নেতাকর্মীসহ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন ওই নেতা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৯’শ প্যাকেটের ত্রাণের মাল উপজেলার ১ টি পৌরসভা ও ১১ টি ইউনিয়নে ৯’শ দুস্থ পরিবারের মাঝে বিতরণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।
স্থানীয়রা জানায়, গত মঙ্গলবার (১২ মে) কৈমারী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে দাতা সংস্থা কাতার চ্যারিটি’র অর্থায়নে ৯’শ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। যার মধ্যে ছিল ২০ কেজি চাল,৫ লিডার তেল,২ কেজি ডাল, ২ কেজি বুট, ২ কেজি খেজুর, ২ কেজি চিনি, ২ কেজি পেয়াজ ও ১ কেজি লবণ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ত্রাণ বঞ্চিত কয়েকজন জানান, ত্রাণের মাল দেওয়া তো দুরের কথা আমাদেরকে কাছেই ভীরতে দেয়নি লেলিনের লোকজন।
ত্রাণ কাজে নিয়োজিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি ত্রাণের মাল বিতরণের তালিকা সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ করেন। তালিকায় দেখা যায়, উপজেলার একটি বাইরের মাদ্রাসাসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকের নাম। যারা এই মালের সিংহভাগ তুলে নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ত্রাণ বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার পিতা ও কৈমারী ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সাইদার রহমান মাষ্টার, কাতার চ্যারিটি এতিমখানার কচুয়া সরদারপাড়ার পরিচালক হাফেজ হায়দার আলী, কাতার চ্যারিটি বাংলাদেশ প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধি আবু সায়েদ প্রমুখ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক মোকছুদার রহমান লেলিন বলেন, “এগুলো মিথ্যা অভিযোগ, ত্রাণের মাল কোনও ভাগ বাটোয়ারা হয়নি।”
ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে কাতার চ্যারিটি এতিমখানার কচুয়া সরদারপাড়ার পরিচালক হাফেজ হায়দার আলী বলেন, “বিতরণে আমি যতক্ষণ ছিলাম তখন কোনও অনিয়ম পাইনি, তবে আমি চলে আসার পর কিছু অনিয়মের অভিযোগ শুনেছি।”
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস বলেন, “কাতার চ্যারিটি’র ত্রাণ বিতরণে সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, “সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ত্রাণ বিতরণের জন্য দুস্থদের তালিকা উপজেলা প্রশাসনকে দেওয়ার কথা থাকলেও তারা তালিকা জমা দেননি।”
বিতরণের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর বলেন, “আমি কিছু জানি না, তবে শুনেছি।”