হোম কোয়ারেন্টিন থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় প্রিন্স ফয়সালকে
সৌদি আরবের প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহর ছেলে প্রিন্স ফয়সালকে গ্রেফতার করলেও তাকে কোথায় রাখা হয়েছে, তা বলতে অস্বীকার করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
শনিবার মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এমন দাবি করেছে। মিডল ইস্ট আইয়ের খবর জানায়, গত ২৭ মার্চ রিয়াদের উত্তরাঞ্চলে প্রিন্স ফয়সালের পারিবারিক বাসভবনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আসে। কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচতে সেখানে পিন্স ফয়সাল হোম-আইসোলেশনে ছিলেন। এখন তার অবস্থান নিয়ে পরিবার সদস্যরা অন্ধকারে রয়েছেন। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত থাকায় উদ্বেগ বেড়েছে বলে খবরে জানা যায়।
লন্ডনে পড়াশোনা করা প্রিন্স ফয়সালের সৌদি গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। মন্ত্রী পদমর্যাদায় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধানের দায়িত্ব পালনও করেছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এর আগে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তাকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৭ সালের শেষ দিকে তিনি ছাড়া পান।
এর আগে গত মার্চে বাদশাহ সালমানের ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুল্লাহ ও সাবেক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফকে আটক করে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
২০১৭ সালে প্রাসাদ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মোহাম্মদ বিন নায়েফকে হটিয়ে সিংহাসনের উত্তরসূরি হন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
রাজপরিবার সম্পৃক্ত সূত্র জানায়, সালমানের সিংহাসন ত্যাগ কিংবা মৃত্যুর পর যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বাদশাহ হওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন রাজপরিবারের ভেতরে আনুগত্য নিশ্চিত করতে নিবৃত্তিমূলক চেষ্টার অংশ এই গ্রেফতার।
মার্চের অভিযানের সঙ্গে ফয়সালের গ্রেফতারের সম্পর্ক রয়েছে কিনা; তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। তখন আহমেদের ছেলে নায়েফ ও মোহাম্মদ বিন নায়েফের ভাই নওয়াফকেও আটক করা হয়।
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতেই এই গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছেন বলে সমালোচকদের অভিযোগ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপপরিচালক মাইকেল পেজ বলেন, কোনো ধরনের আইনি ভিত্তি ছাড়াই সৌদিতে আটক শত শত প্রিন্সের তালিকায় ফয়সালও যুক্ত হলেন।
তবে কাউকে বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলে দাবি করে আসছে সৌদি আরব। এইচআরডব্লিউ জানায়, প্রিন্স ফয়সালকে কোথায় রাখা হয়েছে, তার অবস্থা কী, এ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে প্রকাশ্যে সৌদি কর্তৃপক্ষের কোনো সমালোচনা করেননি প্রিন্স ফয়সাল। তিনি হৃদরোগী হওয়ায় তার স্বাস্থ্য নিয়ে পরিবার উদ্বিগ্ন বলে খবরে জানানো হয়েছে।