নরসিংদীতে তিন সাংবাদিক গ্রেফতার, একাই প্রতিবাদ সাংবাদিকের
পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নরসিংদীতে তিন সাংবাদিককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে লকডাউন পরিস্থিতিতে একাই প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের এক সাংবাদিক।
রোববার (০৩ মে) দুপুরে শহরের আলফাত উদ্দিন স্কয়ার পয়েন্টে ‘নরসিংদীর তিন সাংবাদিকের মুক্তি চাই’ প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান দৈনিক খোলাকাগজ ও স্থানীয় দৈনিক সুনামকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার শহীদ নূর আহমেদ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে শহীদ নূর আহমেদ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করতে গিয়ে সাংবাদিকরা এই আইনের অপপ্রয়োগের শিকার হচ্ছেন। নিহতের পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশ করে পুলিশের রোষানলে পড়েছেন নরসিংদীর তিন সাংবাদিক। পুলিশের বিরুদ্ধে সংবাদ করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে তিন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিষয়টি তদন্ত করে সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানাই।
এর আগে শুক্রবার সকালে নিজ নিজ বাড়ি থেকে নরসিংদীর তিন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে ঘোড়াশাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল আলম বাদী হয়ে পলাশ থানায় তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- দৈনিক গ্রামীণ দর্পণ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক রমজান আলী প্রামাণিক, একই পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার শান্ত বণিক ও অনলাইন পোর্টাল নরসিংদী প্রতিদিনের প্রকাশক ও সম্পাদক খন্দকার শাহিন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে মামলার বাদী তার ফেসবুক আইডিতে ঢুকে দৈনিক গ্রামীণ দর্পণ পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘ঘোড়াশালে চুরির অপবাদে যুবককে পিটিয়ে হত্যা পুলিশের’ শিরোনামে একটি এবং নরসিংদী প্রতিদিনে ‘ঘোড়াশাল ফাঁড়িতে নেয়ার পর মৃত্যু, অভিযোগ পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদন দুটোতে ঘোড়াশাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক ও মামলার বাদী জহিরুল আলমের বরাত দিয়ে একটি বক্তব্য প্রকাশ করা হয়। যা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে মুঠোফোন কিংবা সরাসরি ওই সাংবাদিকরা পরিদর্শক জহিরুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই বক্তব্য সংবাদে দিয়েছেন। এতে স্থানীয় অটোচালক ও ইজিবাইক চালকরা উত্তেজিত হয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে। ফলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পলাশ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, মামলার প্রাথমিক তদন্তে ও উদ্ধারকৃত আলামতের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এরই প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।