ডাক্তাররাই এখন পরিবারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ
জোহরাফ মুনা পেশায় চিকিৎসক। করোনা সংকটে তিনিও তার দায়িত্ব পালন করছেন। হাসপাতালের ডিউটি শেষে বাসায় যেতে হয় তাকে। কিন্তু সেখানেই তার ভয়। বাসায় ছোট ছোট দুটি সন্তান রয়েছে। সেসব নিয়েই আবেগঘন কিছু কথা লিখেছেন ফেসবুকে। তা তুলে ধরছি পাঠকদের জন্য-
তিনি লেখেন, ‘হ্যাঁ, সত্যি এখন আমার ভয় করে হাসপাতালে যেতে, ডিউটির পর বাসায় ফিরতে। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবো। নিজেকে এই পেশায় বিলিয়ে দিতে কখনো পিছপা হবো না। নিজের অসুস্থ বাচ্চা বাসায় রেখেও হাসপাতালের বাচ্চাদের চিকিৎসা দিয়েছি। আমার নিজের খাওয়া, ঘুম বাদ দিয়ে রোগী দেখতে সমস্যা নেই, কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি একদমই ভিন্ন! এখন আমি আমার পরিবারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
ডা. মুনা লেখেন, ‘আমার মাধ্যমে যদি ভাইরাস বাসায় নিয়ে যাই, তো আমার বাচ্চাদের কী হবে? বাসার অন্যদের কী হবে? তবুও আমি ডিউটি করছি। পালাইনি, পালাবোও না। ভয় করে বাচ্চাদের চুমু দিতে, কোলে নিতে। নিজের নিশ্বাসকেই বিষাক্ত মনে হয়। দুটা বাচ্চাই তো অনেক ছোট। নিজে নিজে খাওয়াটাও শেখেনি। কী যে করছে আল্লাহই জানে! তার মধ্যে পিপিই পরে কাজ করাও বিশাল এক যন্ত্রণা!’
সবশেষে তিনি লেখেন, ‘মনে হয় মাথা থেকে পা পর্যন্ত পলিথিনের চাদর পেঁচানো। গরমে অবিরাম ঘাম ঝরতে থাকে। এন৯৫ মাস্ক পরে দম কেমন বন্ধ হয়ে আসে। আর চশমার উপর আরেকটা ভারী চশমা পরে চোখ, নাক, কান ব্যথায় টনটন করতে থাকে! প্রতিটি ডিউটিই এমন মানসিক আর শারীরিক কষ্টে ভরা। জানি না কতদিন টিকে থাকবো। তবে আমি পালাব না। ডাক্তাররা কখনো পালায় না। ডাক্তারদের পালাতে নেই!’