মুলা সিদ্ধ খেয়ে দিন কাটাচ্ছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর পরিবার

0

এক চোখ পুড়ো আর এক চোখে কাছের জিনিস কিছুটা দেখতে পাওয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর আসাদুল মিয়া ভ্যানগাড়িতে করে ঝাল মুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতেন। তবে এ ক্ষেত্রে তাকে তার পরিবার ও এলাকার লোকজন চলাচলের জন্য সহযোগিতা করেন।

আসাদুল মিয়া বলেন, সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির (লকডাউন) কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছি। ঘরে চালসহ তরি-তরকারি না থাকায় গ্রামে মানুষের কেটে নেওয়া গমের শীষ কুড়িয়ে আটা করে খাচ্ছি। আর তরকারি হিসাবে মানুষের মুলা খেত থেকে পরিত্যক্ত মুলাগুলো নিয়ে এসে কোন রকম সিদ্ধ করে খাচ্ছি।  

জানা গেছে, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় তার ঝাল মুড়ি বিক্রির ব্যবসা বন্ধ। তবে এর মধ্যে সংসারে চাল ডাল তরি-তরকারী না থাকায় স্ত্রী সন্তানদের খাওয়ার অভাব পূরণের জন্য বেরিয়েছিলেন ঝাল মুড়ির ভ্যানের দোকান নিয়ে। তা নিয়ে বেরিয়ে শহরে দাঁড়াতেই পুলিশ এসে তার ঝালমুড়ির ভ্যান গাড়ির দোকানে লাঠি দিয়ে আঘাত করে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। সে থেকে পরিবার নিয়ে কষ্টে আছেন এই দৃষ্টি প্রতিবন্ধি আসাদুল(৩০)। কোন ত্রাণ বা জন প্রতিনিধির সহযোগিতা পাননি। 

জানা গেছে, আসাদুল মিয়ার বাড়ি ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল পৌর শহরের ৯ নং ওর্য়াডের মহলবাড়ী গ্রামে। তার পরিবারে দুই ছেলে স্ত্রী সহ মোট চারজন সদস্য। 

সম্প্রতি রাণীশংকৈল প্রেসক্লাব সভাপতি ফারুক আহাম্মদ সরকারের কাছে তার কষ্টের কথা বলেন। আসাদুল বলেন আমি এক চোখে দেখিনা আরেক চোখে কিছুটা কাছের জিনিস দেখতে পাই। ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতাম। এখন সরকারি নিষেধে ব্যবসা বন্ধ। বাড়িতে যা চাল ডাল ও যোগানকৃত অর্থ ছিল তা শেষ। আমি পরিবার নিয়ে কোন রকম খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি।

তিনি প্রেস ক্লাবের উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কি সরকারি ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য না। আমি কি ত্রাণ পেতে পারি না। কেন পাইনি আমাকে কেও বা কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের লোক সামান্য সহযোগিতা করেনি। সরকারি এক দানা চাল বা ডাল পাইনি।

প্রতিবন্দি আসাদুল অনেকটা ক্ষোভ নিয়ে বলেন, ঘরে খাবারের অভাব হওয়ায় কিশোর দুই ছেলেকে বাধ্য করে রোযা ধরিয়েছি। কারণ না খেয়ে থাকার চেয়ে রোযা থাকা অনেক ভাল। এমন অবস্থায় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে গিয়েও কোন সহযোগিতা পাইনি। তাই শেষ ঠিকানা হিসাবে বাধ্য হয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসেছি।

এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে বুধবার(২৯ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী আফরিদার কার্যালয়ে বেলা তিনটার দিকে গিয়ে না পেয়ে একাধিবার ফোন দিলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com