করোনা মোকাবিলার টাকা যাচ্ছে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-সিন্ডিকেটের পকেটে!
গোটা বিশ্বকে গ্রাস করে ফেলেছে নভেল করোনাভাইরাস। এর দরুণ সৃষ্ট পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকটে পড়েছে মানুষ। করোনা মোকাবিলায় দেশে দেশ সরকারগুলো জরুরি সহযোগিতা ব্যবস্থা নিচ্ছে। তখন এই সুযোগে সক্রিয় উঠেছে দুর্নীতিবাজরা।
খাদ্য সহযোগিতা থেকে শুরু করে মাস্ক বিতরণ সব জায়গায় সরকারগুলো স্বচ্ছতা রাখার চেয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকারগুলো। মহামারিটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে নিয়মমাফিক প্রতিযোগিতামূলক টেন্ডার বা অনিয়ম রোধে অন্যান্য ব্যবস্থাগুলো নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি ছাড়া উপায়ও নেই। নয়ত দ্রুততার সঙ্গে লাখ লাখ মানুষের কাছে সহযোগিতা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে না।
এমন পরিস্থিতিতে এসব জরুরি সহযোগিতার টাকা দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা, তাদের ঘনিষ্ঠ টিকাদার আর অপরাধ সিন্ডেকেটগুলোর পকেটে ঢুকছে।
করোনা পরিস্থিতিতে এমন দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের নাম উঠে আসে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য যে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে সরকার সেটির ওপর সরসভাবে বেশি হামলে পড়ছে দুর্নীতিবাজরা। ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য বাংলাদেশ সরকার এই মাসে যে চাল বিতরণ কর্মসূচি শুরু করেছিল তার প্রায় ৬ লাখ পাউন্ডই গায়েব হয়ে গেছে।
ইতোমধ্যে সরকারি চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে অন্তত ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিও রয়েছে। ফলে তাদেরকে বাইরে রেখে সরকার অন্যভাবে ওই কর্মসূচি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রান্সপেরিন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রধান ইফতেখারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এমন জাতীয় সংকটের মুহূর্তে সহানুভূতি ও সংহতির মতো নৈতিক গুণাবলী সবচেয়ে বেশি আশা করা হয়, আমরা অনেক জায়গায় সেটি দেখছিও। কিন্তু আফসোস এবং লজ্জাজনক হচ্ছে এতে অনেক খারাপ ঘটনাও প্রকাশ পেয়েছে।’
প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের পাশাপাশি কলম্বিয়া, রোমানিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু দুর্নীতির চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা খাতে কোটি কোটি ডলারের দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে দেশগুলোতে।
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের আইনজীবী দলের প্রধান ম্যাক্স হেইউড বলেন, ‘বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটছে। জনগণের জন্য যে অর্থ ব্যয় করার কথা বলা হচ্ছে, সেই প্রক্রিয়ায় আসলে অনেক ফাঁক থেকে গেছে। এতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলা ঠিক হবে।’