দেয়ালে নোটিশ টাঙিয়ে ৭০৯ শ্রমিক ছাঁটাই, দেয়া হলো না বেতনও
করোনাভাইরাসের কারণ দেখিয়ে সাভারের আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার ৭০৯ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের কাউকে বেতন দেয়া হয়নি।
শনিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে আশুলিয়ার নরসিংপুর এলাকার ‘সিগমা ফ্যাশন লিমিটেড’ কারখানার দেয়ালে ছাঁটাই সংক্রান্ত নোটিশ টাঙিয়ে দেয়া হয়। এর প্রতিবাদে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
নোটিশে বলা হয়, বর্তমানে সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ায় সিগমা প্রতিষ্ঠানের সব রফতানিজাত পণ্যের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সব ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে গেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ এপ্রিল থেকে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় কারখানাটি সম্পূর্ণভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। নোটিশে থাকা শ্রমিক ও কর্মচারীদের বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১২, ১৬ এবং ২০ অনুযায়ী ১৮ এপ্রিল থেকে ছাঁটাই করা হলো। সরকারি ডাক বিভাগ খোলা সাপেক্ষে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের স্থায়ী ঠিকানায় ছাঁটাইয়ের চিঠি পাঠানো হবে।
এই কারখানায় আট বছর ধরে কাজ করছেন নীলফামারী থেকে আসা কাজলী বেগম। ছাঁটাই তালিকায় রয়েছে তার নামও।
তিনি বলেন, ‘আমি এত বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করছি। হঠাৎ সাধারণ ছুটির মধ্যে কারখানা বন্ধ করে দেয়া কোন আইনে আছে। আমাদের বেতন দেয়নি। অফিস থেকে কিছু বলাও হয়নি। হুট করে আজ সকালে শ্রমিকদের নাম দিয়ে ছাঁটাই তালিকা টাঙিয়ে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।’
কারখানার সামনে বিক্ষোভ করা ছাকিনুর ইসলাম বলেন, করোনার কারণে কারখানা বন্ধ হলো। আমরা যার যার বাসায় অবস্থান করছি। হঠাৎ একজন ফোন দিয়ে বলে চাকরি নেই। রুম ভাড়া বাকি আছে, ঘরে চাল নেই। বাড়ি যে যাব তারও টাকা নেই। আর চাইলেই তো বাড়ি যেতে পারছি না। কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের এভাবে ছাঁটাই করল। আমরা এখন কোথায় যাব, কী করব। কারখানায় চাকরিতে পুনর্বহাল না করলে এখানেই অবস্থান করব আমরা।
এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা আল-কামরান বলেন, এই মুহূর্তে শ্রমিকরা যেহেতু বাড়িতে যায়নি, সেহেতু এই শ্রমিকদের ছাঁটাই না কারখানার লে-অফও মানা যায় না। যেভাবে অন্য সব শ্রমিকের বেতন দেয়া হবে সেভাবে এই দুর্যোগ সময়ে এই শ্রমিকদের বেতন দেয়ার দাবি জানাই। সেই সঙ্গে ছাঁটাই শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে জানতে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ‘আমরা যা করেছি সব নোটিশে লেখা আছে’ বলেই ফোনের লাইন কেটে দেন।