বাংলাদেশকে ভুলভাবে চিত্রায়ন: সমালোচিত ‘এক্সট্র্যাকশন’

0

নেটফ্লিক্সের ‘এক্সট্র্যাকশন’ নিয়ে সিনেমাপ্রেমীদের মাঝে প্রথম থেকেই তুমুল আকর্ষণ ছিল, কারণ এর গল্পের পটভূমি ঢাকা। কিন্তু মুক্তির প্রথম দিনেই বাংলাদেশি দর্শকদের সমালোচনার মুখে পড়েছে।

ভারত-বাংলাদেশের দুই ড্রাগলর্ডের লড়াই নিয়ে এই সিনেমার কাহিনি আবর্তিত। পর্দায় দেখানো বেশির ভাগ দৃশ্য ঢাকার শহরের বলা হলেও বিশ্বাসযোগ্যভাবে উঠে আসেনি বলে অভিযোগ।

এ ছাড়া তরুণ এক ড্রাগলর্ডের কথায় ঢাকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও মিলিটারি যেভাবে তৎপরতা দেখায়- তাকে দেশের জন্য অপমানজনক ও বাস্তবতা বিবর্জিত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন দর্শকেরা। শিশুদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিত্রায়ন ও অন্য কিছু বিষয়কে আফ্রিকার সন্ত্রাস উপদ্রূত এলাকার সঙ্গে তুলনা করছেন। যা কোনোভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

পাশাপাশি ঢাকার চরিত্রদের উচ্চারণ নিয়ে কথা উঠেছে। তারা হয় বিদেশিদের মতো কথা বলছে, নয়তো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উচ্চারণে বলছে।

‘এক্সট্র্যাকশন’-এ মূলত পুরনো ঢাকাকে লোকেশন হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু অনুষঙ্গ বলতে সিএনজি অটো রিকশা ছাড়া আর কিছুই সেভাবে আসেনি। একটি সিএনজির পেছনে লেখা দেখা যায়, আল্লাহ সার্ভ শক্তিমান। ঢাকা নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণার অভাব ফুটে উঠেছে এতে।

কয়েকটি গানের অংশবিশেষ শোনা গেলেও একটি বাদে বাকিগুলো দশক পুরোনো হিন্দি গান। এমনকি হিন্দি সাইনবোর্ডও দেখা যায়।

সাড়ে ৬ কোটি ডলার বাজেটের সিনেমাটির মূল দৃশ্যায়ন হয়েছে ভারত ও থাইল্যান্ডে। ঢাকার কিছু দৃশ্য আলাদাভাবে ধারণ করে পড়ে জুড়ে দেওয়া হয়। যে কারণে মূল চরিত্রের সঙ্গে পারিপার্শ্বিক অনেককিছু মানানসই মনে হয়নি- বলছেন কেউ কেউ।

নেটফ্লিক্সের অরিজিনাল কনটেন্টটি শুক্রবার অনলাইনে আসে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের দর্শকেরা ক্ষোভ উগরে দেন। অনেকে ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ তথা আইএমডিবি-তে নেগেটিভ রেটিং দেওয়ার আহ্বানও জানান।

তবে কেউ কেউ একে গতানুগতিক হলিউড সিনেমা হিসেবে দেখার ভাবার কথা বলছেন। যেখানে বাংলাদেশের বদলে অন্য কোনো দেশের নাম আসলেও কাহিনির হেরফের হবে না।

এ দিকে জানা গেছে, চিত্রনাট্যকার জো রুশো গল্পটি লিখেছিলেন প্যারাগুয়ের প্রেক্ষাপটে এক দশক আগে। গল্পটি ভারত-বাংলাদেশে এনে ফেলা হয়েছে একটি বিশেষ কারণে।

নেটফ্লিক্স এখন প্রবলভাবে ভারত-কেন্দ্রিক কনটেন্ট তৈরিতে আগ্রহী। কারণ বিগত আর্থিক বছরে সেখানে নেটফ্লিক্স যতটা আয় করবে ভেবেছিল, তার দ্বিগুণেরও বেশি ব্যবসা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে। তাই গল্পের প্রেক্ষাপট বদলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ও বাংলা কানেকশন রেখেছেন দুই ভাই জো এবং অ্যান্থনি রুশো। ‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ড গেম’-খ্যাত দুই পরিচালক এই ছবির প্রযোজকও। আর এর মাধ্যমে পরিচালনায় অভিষেক হয়েছে স্যাম হারগ্রেভের।

দুর্বল ও অসঙ্গতিপূর্ণ গল্পের এই ছবির নায়ক হিসেবে আছেন ‘অ্যাভেঞ্জার্স’ সিরিজের থর-থ্যাত ক্রিস হেমসওয়ার্থ। সঙ্গে বলিউডের রণদীপ হুদা ও পঙ্কজ ত্রিপাঠী-সহ কলকাতার কয়েকজন অভিনেতা। ঢাকায় ধারণ করা দৃশ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল অভিনেতা তারিক আনাম খানের প্রতিষ্ঠান। ভাষাগত পরামর্শক হিসেবে ছিলেন ওয়াহিদ ইবনে রেজা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com