মেম্বারের ভরসা চেয়ারম্যান, তবুও জোটেনি ত্রাণ
একজনের নাম শহিদা বেগম ( ৫০) অপরজনের নাম শরিতন বেগম (৪৮)। তারা আপন দুই বোন। দুইজনেই বিধবা। একজন স্বামী হারিয়েছেন ১৫ বছর আগে আরেকজন হারিয়েছেন ৮ বছর আগে। থাকেন একসঙ্গে। স্বামী হারিয়ে এই দুই বিধবা বোন সংসারকে টিকিয়ে রাখার জন্য মানুষের বাড়িতে গিয়ে কাজ করতেন। বর্তমানে করোনার কারণে মানুষের বাড়িতে যাওয়া বন্ধ। নেই কোনো কাজ আবার নেই কোনো জমাজমি। সামন্য ভিটেমাটিতে নড়েবড়ে খুঁটির ঘরে কোন রকমেই রাতটি কেটে যায় ওদের। সকাল – বিকাল – রাত কিভাবে কেটে যায় কথা বলে জানা গেলো ওদের সঙ্গে। তাদের দুইজনেই বাড়ি গাইবান্ধার সদর উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বকসী খামার গ্রামে।
তারা দুজনই চোখের জ্বল পরনের ছেড়া শাড়ির আঁচলে মুছতে মুছতে বললেন, এ বাড়ি ও বাড়ি হাত পেতে কোনো রকমেই সংসারটা টিকে রেখেছি। বিধবা ভাতাও তাদের কপালে জোটেনি। করোনা ভাইরাসের কারণে কাজ না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছি। শুনেছি সরকারিভাবে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। সেই জন্য মেম্বরের কাছে গিয়েছি, মেম্বর ভরসা দিয়ে বলেন চেয়ারম্যানের কাছে যাও। আবার চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে দেখি ঘরের দরজার গেটে বড় দুটো তালা লাগানো। অনেকবার ডাকাডাকি করার পরও তিনি কোনো সাড়া শব্দ করেন না। সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে খালি হাতে ফিরে আসি। এখন ঘরে চাল নেই কিভাবে কাটবে পরবর্তী দিনগুলো।
এ বিষয়ে গাইবান্ধার ১নং লক্ষীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান বাদলের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, সবাইকে এক সঙ্গে ত্রাণ দেওেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা তালিকা করে দিচ্ছি। কেউ যদি বাদ পড়ে থাকে তাহলে তাকে দেয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে অতি দরিদ্র ও কর্মহীনরা কেউ বাদ পড়েনি।
অন্যদিকে গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রসুন কুমার চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে এদের সু -নজরে এনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফোটাবেন বলে এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন সচেতন মহল।