ভিআইপিদের চিকিৎসায় আলাদা করোনা হাসপাতাল সংবিধান লংঘন
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (স্বাস্থ্য শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির গতকাল মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ভিআইপিদের জন্য আলাদা করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তিনটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে মন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন ভিআইপিদের করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকেও জানানো হয়েছে, এখানে ভিআইপিদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। সেভাবে আইসিইউও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আমাদের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে আইনের দৃষ্টিতে সমতার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই মৌলিক অধিকারটি দিয়ে ২৮(১) অনুচ্ছেদ বলে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র কোনরকমের বৈষম্য প্রদর্শন করতে পারবে না।
তবে, সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদে ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী’ বা নাগরিকদের যে কোন ‘অনগ্রসর’ অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ সুবিধার কথা বলা আছে। কিন্তু মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হলো- মন্ত্রী, এমপি, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাসহ ভিআইপিরা কি ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী’ বা সমাজের ‘অনগ্রসর অংশ’?
সংবিধানের ১৫(ক) অনুচ্ছেদে দেশের মানুষের চিকিৎসাসহ জীবন ধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা করা সরকারের অন্যতম সাংবিধানিক দায়িত্ব। আর যদি বিশেষ আইসিইউসহ আলাদা হাসপাতাল সুবিধা দিতেই হয়, তাহলে এই তথাকথিত ভিআইপি ক্লাস ব্যতীত সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদ মতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীকেই এই সুবিধা দিতে হবে।
তাছাড়া,গতবছর ৩১ জুলাই হাইকোর্ট পরিস্কারভাবে বলে দিয়েছে- ‘রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ ভিআইপি নয়, বাকিরা সবাই রাষ্ট্রের চাকর।’
লেখক: আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ