সরকারি ত্রাণ যাচ্ছে ক্ষমতাসীনদের বাড়ি: এমাজউদ্দীন
ড. এমাজউদ্দীন বলেন, সরকারি ত্রাণ নিজেদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গেলেও প্রধানমন্ত্রী বার বার বলছেন, নেতাকর্মীদেরকে এই সময়ে অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের পাশে থাকতে হবে। এতে উল্টো সরকার দলের নেতাকর্মীরা সেই নির্দেশনা না মেনে ত্রাণ আত্মসাৎ চুরিতে মেতে উঠেছেন। প্রতিদিন কোনো না কোনো জেলায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এতে ত্রাণ চলে যাচ্ছে ওইসব নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে।
তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের মধ্যবিত্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী দিতে হবে। অনেকে চাইতে পারছে না। লজ্জায় বলতে পারছে না। তাদের জন্য আমাদের কিছু করতে হবে। যারা চাইতে পারছে না তাদের সাথে দেখা করবেন এবং তাদেরকে সাহায্য করবেন। প্রয়োজনে কৌশলে জেনে নেবেন তাদের অবস্থা। প্রয়োজনে গোপনে তাদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়ে দিবেন। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো নিয়ে সবাই চিন্তা করবেন। সবাই মিলে একটু একটু করে দিলে অন্তত মানুষ খেয়ে বাঁচবে। শুধুমাত্র সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। যাদের সামার্থ্য আছে, তাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে ।
এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও ঘরে থাকতে গিয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের আয় অনেক কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে চরম দারিদ্র্য হার আগের চেয়ে বেড়ে গেছে ৬০ শতাংশ। ১৪ ভাগ মানুষের ঘরে খাবার নেই।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস আক্রমণ হলে এর ব্যবস্থাপনার জন্য করণীয় সম্পর্কে পৃথক, বৃহৎ মাত্রার প্রচারাভিযান চালাতে হবে। সামাজিক দূরত্ব পদক্ষেপ সঠিক বাস্তবায়নের জন্য দেশব্যাপী খাদ্য সংকটে পড়া মানুষের কাছে অতি শিগগিরই খাদ্য সামগ্রী পৌঁছাতে হবে, তা না হলে তাদের ঘরে রাখা সম্ভব হবে না। জীবিকা অর্জনে তারা বাইরে বের হতে বাধ্য হবেন। শহর থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ গ্রামে ফিরে গেছেন, যারা গ্রামকেন্দ্রিক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতাভুক্ত নন তাদের কাছে জরুরি খাদ্যসামগ্রী পৌঁছাতে হবে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে প্রথম সারিতে যাদেরকে আমাদের খুব বেশি প্রয়োজন সেই চিকিৎসকদের একজন, গরিবের ডাক্তার মঈন উদ্দিন চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। সঠিকভাবে বলতে হয়, আমরা তাকে বাঁচাতে চেষ্টাই করিনি।
প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, চিকিৎসক ও স্বাস্থকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী রয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে তা যথাসময়ে দিতে চাননি। তত দিনে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষানবিশ, এমনকি মিড লেভেল চিকিৎসকদের তা পেতে কর্মবিরতিতে পর্যন্ত যেতে হয়েছে। এরপর প্রায় এক মাস সময়ে এখন পর্যন্ত তাদের এক সেট পিপিই নিয়ে সেবা দিয়ে যেতে হচ্ছে। কেন? এটি কি প্রয়োজনে ব্যবহার না করে সাজিয়ে রাখার জিনিস?
খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে সাংবাদিক ও প্রকাশক শত নাগরিক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার উপস্থিত ছিলেণ। প্রতিটি পরিবারকে দুই কেজি চাল, এক হালি ডিম, পাঁচশ গ্রাম ডাল, আর তেল দেয়া হয়।