চোখের মাধ্যমে যেভাবে শরীরে ঢোকে করোনাভাইরাস
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মুখ, চোখ এবং নাক যতটা সম্ভব স্পর্শ না করে থাকতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। একই কারণে বারবার হাত ধোয়ার প্রতি জোর দেয়া হচ্ছে। কারণ এগুলোর মাধ্যমেই শরীরে ঢুকে পড়ে এই মরণঘাতি ভাইরাস। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত মানুষের হাঁচি-কাশির ড্রপলেট বাতাসে ঘুরে বেড়ায়। রোগীর কাছাকাছি থাকা সুস্থ মানুষের নাক, মুখ ও চোখের মাধ্যমে তার শরীরে প্রবেশ করে এই ড্রপলেট।
শরীরে এসেই ভাইরাসের অণুগুলো দ্রুত নাসাপথের পিছন দিকে বা গলার ভিতরের দিকে মিউকাস মেমব্রেনের ভিতরে গিয়ে সেখানকার কোষে হানা দেয়। সেই কোষই তখন হয়ে যায় গ্রাহক বা রিসেপ্টর কোষ। আর মুখ ও নাকের পর এই ভাইরাসের সংক্রমণের অন্যতম মাধ্যম হলো চোখ।
মনের অজান্তে যখন-তখন হাত চলে যায় চোখে, সেখান থেকে শরীরে প্রবেশ করে। চোখে যাতে হাত দেয়া না হয় সে ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে প্রত্যেককে। তবে, করোনা নিয়ে অকারণ আতঙ্ক নয়, বরং নিয়ম মেনেই দূরে থাকুন।
চোখের মাধ্যেমে শরীরে প্রবেশ করে যেভাবে: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চোখের অশ্রুগ্রন্থির সঙ্গে মিশে গিয়ে এই ভাইরাস চোখের নেত্রনালিতে চলে যায়। এরপর তা সরাসরি নাকে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকে শ্বাসতন্ত্রে যায় এবং সংক্রমণ শুরু করে।
চোখ থেকে ফুসফুস: চোখের অশ্রুগ্রন্থি থেকে ট্রাকিয়া হয়ে ফুসফুসে পৌঁছয়। এর ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা তৈরি করতে পারে। শিকাগো স্কুল অব মেডিসিনের প্যাথোলজি বিভাগের অধ্যাপক সু-ইউয়ান জিয়াও চিনের করোনা-আক্রান্ত রোগীদের রিপার্ট পরীক্ষা করেন। তার মতে, ফুসফুসের দুই পাশের পেরিফেরিয়াল অঞ্চলে আক্রমণ করে উপরের শ্বাসানালী ও ট্রাকিয়ার দিকে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাস।
কন্টাক্ট লেন্সে ঝুঁকি: যারা কন্টাক্ট লেন্স পরেন তাদের কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ তারা অন্যদের তুলনায় বেশি করে চোখ স্পর্শ করেন। তাই কন্টাক্ট লেন্স যারা পরেন তারা যেন হাত বারবার করে পরিষ্কার করুন। লেন্স খোলা বা পরার সময় অবশ্যই হাত জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। যেকোনো উপায়ে হাত যেন চোখে-মুখে না যায় সে ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। নিতান্তই চোখে হাত দিতে হলে টিস্যু পেপার ব্যবহার করা উচিত।