মাফিয়া ডনের প্রেমে পড়ে সব হারাতে হয় এই নায়িকাকে

0

এক সময় সালমান খান, সঞ্জয় দত্ত ও সুনীল শেঠিদের মতো সুপারস্টারদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন মনিকা বেদি। দেখা গেছে বাংলাদেশি সিনেমায়ও। কিন্তু মাফিয়া ডনের প্রেমে পড়ে ঝলমলে ক্যারিয়ার হারাতে হয় তাকে।

মুম্বাইয়ের গ্যাংস্টার আবু সালেমের সঙ্গে মনিকা বেদির প্রেম কাহিনি একটু অন্য রকম। নিখাদ ভালবাসার জন্ম নিয়েছিল তাদের মধ্যে। সে কারণেই সব জেনেও নাকি সম্পর্ক থেকে বেরোতে পারেননি মনিকা। জেলে পর্যন্ত যেতে হয়েছিল তাকে।

১৯৯৮ সালের শেষের দিকে দুবাইয়ে একটি শো-তে আবু সালেমের সঙ্গে পরিচয় হয় মনিকার। সালেম নাকি তখন অন্য এক নামে নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন। মুম্বাইয়ে ফিরে আসার পরও তাদের মধ্যে যোগাযোগ রয়ে যায়। বন্ধুত্ব থেকে ক্রমশ গাঢ় হয় ভালোবাসা।

টানা ন’মাস এভাবে চলার মনিকা দুবাই উড়ে যান দেখা করতে। আর সেখানে গিয়েই জানতে পারেন, তার প্রকৃত নাম আবু সালেম। তবে আসল পরিচয় খোলাসা না করে নিজেকে এটা গাড়ি শোরুমের মালিক এবং শো অর্গানাইজার হিসেবেই পরিচয় দেন সালেম।

প্রেমিকের ব্যবহার এতটাই মাটির মানুষের মতো ও কেয়ারিং ছিলেন যে মনিকা এতটুকু সন্দেহ করেননি বলে পরে এক সাক্ষাৎকারে জানান। পরে অবশ্য বুঝতে পেরেছিলেন খুব ক্ষমতাশালী এক ব্যক্তি আবু সালেম। কিন্তু কেন তার এত ক্ষমতা সে বিষয়ে বা নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে কোনোকিছুই কখনো মনিকাকে জানাননি।

নায়িকা যখন পুরো বিষয়টা জানতে পেরেছিলেন, তখন আর কিছুই করার ছিল না। দুজনে ততদিনে যুক্তরাষ্ট্রে গা ঢাকা দেন। মনিকা পালিয়ে আসার চেষ্টা করেও বারবার ব্যর্থ হন।

আবু সালেমের প্রচুর অর্থ থাকলেও ওই সময় মনিকাকে অনেক কাজ করতে হতো। রান্না করতে হত, ঘর পরিষ্কার করতে হতো এমনকি আবু সালেমের জামা-কাপড়ও পরিষ্কার করতে হত তাকেই। যদিও জেলে থাকাকালে সালেমের লেখা চিঠিতে ফুটে উঠে মনিকার প্রতি ভালোবাসার কথা।

মুম্বাই হামলার পর পর্তুগালে গা ঢাকা দেন আবু সালেম ও মনিকা। জাল পাসপোর্ট মামলায় সেখানেই দুজন গ্রেফতার হন। ২০০৫ সালে তাদের মুম্বাইয়ে ফিরিয়ে আনা হয়। সালেমের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির যে সব ধারায় (৩০২, ১২৩ এবং টাডা আইনের ৩২ নম্বর ধারা) অভিযোগ ছিল তাতে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু পর্তুগালে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ। এমনকি যাবজ্জীবনের মেয়াদও অন্যরকম।

দুজনকেই ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য ১৯৬২ সালের ভারতীয় প্রত্যর্পণ আইনে রদবদল ঘটাতে হয়। সেই আইনে ৩৪ (গ) অনুচ্ছেদটি জুড়তে হয়েছিল। সেই আইন বদলে পর্তুগাল সরকারকে আশ্বস্ত করতে হয়েছিল ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেও দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আবু সালেমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না।

একই ঘটনায় পলাতক প্রধান অভিযুক্ত টাইগার মেননের ভাই ইয়াকুব মেননকে ২০১৫ সালে ফাঁসি দেওয়া হলেও আবু সালেমের বিষয়টি অনেকদিন ঝুলে ছিল। ২০১৭ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তার।

ভারত ফেরার পর বেশ আইনি জটিলতায় পড়েন মনিকা। সে সব কাটিয়ে এখন মিডিয়ায় টুকটাক কাজ করছেন। সিনেমা, টেলিভিশন ও স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত তিনি। তবে পুরোনো খ্যাতি আর ফিরে পাননি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com