মানুষ যদি বেইমানি করে আমি কী করবো: রতন কাহার
বাদশা-পায়েল দেবের কণ্ঠ এবং জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজের নাচে আলোচনায় এসেছে ভারতীয় মিউজিক ভিডিও ‘গেন্দা ফুল’। বিতর্ক তুলেছে ভিডিও’র বিবরণীতে গীতিকার রতন কাহারের নাম উল্লেখ না করায়। এমনকি গানটির রিমেকের কথা তাকে জানানো হয়নি।
এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জি নিউজকে গীতিকার বলেন, “যদি মানুষ এভাবে বেইমানি করে আমি কী করবো বলুনতো? আমি অত্যন্ত গরিব মানুষ। অনেকেই আমাকে ব্যবহার করেছে। অথচ আমার নাম দেয়নি। অনেকেই আমার কাছ থেকে গান নিয়ে গিয়েছে, নিজের নামে চালিয়েছে। তাদের লেখার ক্ষমতা নেই। আমার গান নিজের নামে চালিয়েছে।”
আরও বলেন, “আমি অসহায়। আমি মাটির ঘরে থাকা, মাটির গান লেখা মানুষ। কিছু বুদ্ধিজীবী মানুষ তারা অনেক কথাই বলে, আশ্বাস দেয়। কিন্তু আমাদের মতো শিল্পীকে মূল্য দেয় না। আমার এটা নিয়ে প্রতিবাদ করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই।”
মূল গানটি ‘বড়লোকের বিটি লো’ শিরোনামে পরিচিত। লেখা ও গীত হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, “যতদূর মনে পড়ে ১৯৭২ সালে লিখেছিলাম। গানটা আমি প্রসারভারতীতে প্রথম গেয়েছিলাম। পরে ‘আনন’ গোষ্ঠীর রাজকুমার সাহাকে দিয়েছিলাম। ওনারা কোরাস গাইতেন। সেখান থেকেই গানটা ছড়িয়ে পড়ে। স্বপ্না চক্রবর্তী লিখে নিয়েছিল আমার খাতা থেকে। পরে ১৯৭৬ সালে রেকর্ড করেন। কিন্তু সেখানেও গানটি আমার লেখা ও সুর বলে কোনোভাবে স্বীকার করা হয়নি। তবে রেকর্ড হওয়ার বহু আগেই আমি আকাশবাণীতে গানটি গেয়েছিলাম।”
‘বড়লোকের বিটি লো’ গানটি যে আপনার, অথচ আপনার নাম না দিয়েই রেকর্ড হয়ে গেল বলছেন। আপনি প্রতিবাদ করেননি কেন?
এমন প্রশ্নে রতন কাহার বলেন, “বহুবার বলেছি। কিন্তু আইনি লড়াই লড়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য আমার নেই। কেউই মূল্য দেয়নি। কলকাতায় এমন অনেকেই আছেন যারা আমার থেকে গান নিয়েছেন। শিলাজিৎও আমার কাছ থেকে গান নিয়েছেন। পূর্ণচন্দ্রদাস বাউলও আমার গান গেয়েছেন। তবে অনেকেই ঠকিয়েছেন। তবে আমার লড়ার ক্ষমতা নেই। তবে কেউ স্বীকৃতি না দিক মানুষ আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।”
আর্থিক অনটনের মাঝেই কাটে পশ্চিমবঙ্গে বীরভূমের এই গীতিকবির দিন। তিনি বলেন, “বিড়ি বেঁধে সংসার চলতো। গান গেয়ে বিশেষ কিছুই করতে পারিনি। তবে এখন আর কিছু করি না। আমার দুই ছেলে আর এক মেয়ে রয়েছে।”