‘করোনায় মরার আগে তো না খাইয়া মরমু’
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তারে আতঙ্কিত মির্জাগঞ্জ উপজেলাবাসী । খা খা প্রায়ই জনশূন্য রাস্তাঘাট । ‘কাম না করলে খামু কী? ঘরে একবেলা খাবারের চাউল নাই। জমানো টাকা নাই। যাদের টাকা আছে, তারা চাউল, ডাউল কিইন্যা ঘরে আছে। আমার নাই’। করোনায় মরমু কবে এর আগে তো খিদায় মরমু। বাধ্য হয়ে পেটের জ্বালায় রিক্সা লইয়া রাস্তায় নামছি।
কোন ত্রান পাই না। নেতারা, স্যারেরা মোগো কথা ভাবে না। করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতিতে কেমন চলছে জীবন যাত্রা? জিজ্ঞেস করতেই উপজেলার সুবিদখালী এলাকার মনির নামে এক রিক্সা চালক ওইসব কথা বলেন।
করোনা ভাইরাস সংক্রমন বিস্তার রোধে জরুরী কোন কাজ ছাড়া আগামী ১৪দিন রাস্তাঘাটে মানুষকে না বেরোনোর জন্য বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে প্রচার করা হচ্ছে রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য।
আমাগো এখন কি হইবো ‘ঘরে বসে থাকলে খামু কি? গত ৩-৪ দিন থেকে রাস্তাঘাটে যানবাহন, অটোরিক্সা, রিক্সা, ভ্যান ও মোটাসাইকেল চলাচল অনেকটা কমে গেছে। রাস্তাঘাটে অটোরিক্সা ও ভ্যান তেমন চোখে পড়ছেনা। আতঙ্কে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষরা বিপাকে পড়েছেন। আয় রোজগারের কোন পথ না থাকায় পেটের দায়ে তারা ঘরে থাকতেও পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে রিক্সা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন।
মির্জাগঞ্জ মাজার মোড়ে কয়েজন রিক্সা ও আটো সাথে দেখা হলে তাদের মধ্যে দুলাল খান নামে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ রিকশাচালক বলেন, বাড়িতে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন। প্রতিদিন খাওয়া খরচ প্রায় ২-৩ শত টাকা । ঋণ নিয়ে গাড়িটি কিনেছি । গত ৩-৪দিন থেকে রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য পুলিশ মাইকিং করছে। এজন্য গাড়ি নিয়ে বের হতে পারিনি।
‘ঘরে বসে থাকলে খামু কি?তিনি আরও বলেন, অবস্থা খুব খারাপ। করোনার কারণে বাহিরে মানুষ তেমন বের হচ্ছেনা। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে তো আর পেট চলবে না। কী দিয়ে কিস্তি দিমু। তাই বাধয় হয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছি। এছাড়া ভয়ে বাহিরে নামতে পারিনি। পুলিশ পিটালে- পিটুনি খাওয়া যাবে। কিন্তু গাড়িটা ভেঙে দিলে তো সহজে কিনতে পারবো না। কী যে করমু? বুঝিনা, এইরহম বেশি দিন চললে তো মোগো বউ, মাইয়া পোলা লইয়া না খাইয়া মরা লাগবে। কাগো ভোট দিয়া এমপি , চেয়ারম্যান,মেম্বার বানালাম? ত্রান তো দূরে কথা একটু খোজ ও লইলো না।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার রোধে আগামী দুই সপ্তাহ প্রয়োজন ছাড়া সকলকে বারিহ না হওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার সচেতন করা হচ্ছে।