করোনায় কপাল পুড়েছে কাজের বুয়াদের
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ছে আর্থিকখাতে। বন্ধ হচ্ছে কারখানা। বেকার হচ্ছেন শ্রকিরা। এ থেকে বাদ যাচ্ছে না বাসা বাড়ির গৃহকর্মীরাও।
করোনাভাইরাসের কারণে রাজধানীর ছুটা গৃহকর্মীরাও বেকার হয়ে পড়ছেন।
অধিকাংশ ছুটা গৃহকর্মীকেও কাজে আসতে নিষেধ করছেন মালিকরা। কেউ কেউ টাকা দিয়ে বিদায় করে দিয়েছেন। তবে এ ভাইরাস কত দিন থাকবে। বাড়ি গিয়ে কী করবে ইত্যাদি চিন্তায় দিশেহারা অবস্থা তাদের ।
রাজধানীর জিগাতলায় একটি বাসায় কাজ করে ময়নার মা। বরিশাল থেকে ঢাকায় এসে প্রায় দুই বছর ধরে কাজ করছেন। যে টাকা পান তা দিয়ে বাসা ভাড়া, খাওয়া ও নিজের খরচ মিটিয়ে যা থাকে তা বিবাহিত তিন মেয়ের বাড়ি পাঠায়। মেয়েদের কিছু না দিলে জামাইরা নির্যাতন করে। এখন করোনার কারণে কোনো বাসায় ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। তাই চিন্তায় তার ঘুম হারাম অবস্থা।
এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘জিগাতলার দুই বাসা, ধানমন্ডির এক বাসা ও মনেশ্বর রোডের এক বাসা- মোট চার বাসায় কাজ করি। করোনার কারণে সব বাসা থ্যাক্কাই না কইরা দিছে। ৫-৬ দিন হলো ঘরে বয়া আছি। এক বস্তিতে আমরা প্রায় ২৫ জন থাকতাম। তাগোও কাজে যেতে মানা করায় বেশির ভাগই বাড়িতে চইল্যা গ্যাছে। আমরা তিন-চারজন এহনো আছি। বাড়িতে গিয়াই বা কী করুম। আমাগো তো জমিজমাও নাই।’
গ্রিন রোডে কাজ করেন মধ্য বয়সী গুলবানু। বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। স্বামী তালাক দিয়েছে। গুলবানুর একটা মেয়ে আছে, থাকে বোনের কাছে। তিন বাসায় কাজ করে মেয়ের খরচ এবং দেখাশোনার জন্য প্রতি মাসে কিছু টাকা পাঠান। তাকেও ভাঙা মাসের কয়েক দিনের টাকা দিয়ে না করা হয়েছে।
গুলবানু বলেন, হাতে কোনো কামকাজ নেই। সব বাসা থেকে না বলে দিয়েছে। এখন কোন জায়গায় যাব, কী করবো, কিছু ভেবে পাচ্ছি না। বাড়ি গেলেও না খেয়ে থাকতে হবে। যে বস্তিতে থাকি সে বস্তির অধিকাংশ বুয়াই বাড়ি চলে গেছে। আমরা চারজন এখনো আছি। সামনের মাসে মেয়েটার জন্য টাকা পাঠাতে পারবো কিনা ভাবছি। করোনা না আসলে আমাদের এ অবস্থা হতো না। এটা কবে বিদায় নেবে সেই অপেক্ষায় আছি।