কিছু পণ্যের দাম কমেছে
করোনা-আতঙ্কে কয়েকদিন বাজারে ক্রয়চাপ বাড়লেও গতকাল সোমবার সেই চাপ দেখা যায়নি। বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত। এতে কমেছে পেঁয়াজ-রসুনের দাম। কিন্তু কমেনি চাল, ডাল, আলু, আদা, ভোজ্যতেল, আটা, ময়দাসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম। কমেছে মৌসুমি বিভিন্ন সবজির দাম। তবে মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের চেয়ে ক্রেতার চাপ অনেক কমেছে। কেউ কেউ গতকালও বাড়তি বাজার করেছেন। পণ্যের দাম আগের মতোই বাড়তি বলে তারা জানান।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, ‘গত ১৬ মার্চ থেকে বাজারে চাপ বাড়ে। প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্য ফুরিয়ে যাওয়ায় নতুন করে সরবরাহ করতে হয়েছে। এজন্য বাড়তি দামে পণ্য কিনতে হয়েছে, এজন্য দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, আগে ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট চাল ২২৫০ টাকা বিক্রি করলেও এখন তা ২৯০০ টাকায় বিক্রি করছি। মোটা চালের বস্তায় দাম বেড়েছে ৩০০ টাকা। আর নাজিরশাইল চালে বেড়েছে ৫০০-৭০০ টাকা।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত চার দিন আগে প্রকারভেদে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৮০-৯০ টাকা, তা গতকাল বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকায়। তবে কোনো কোনো খুচরা দোকানে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে। চীনা রসুনের দাম আগে ছিল ১৮০ টাকা, যা এদিন বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকায়। দেশি নতুন রসুন আগে ছিল ১৪০ টাকা, সেটি গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে প্রতিকেজি আলুর দাম ছিল ২০-২২ টাকা, যা এখন ২৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডালের দাম ৩০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকা হয়েছে। আদার কেজি ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৯০ টাকা। চিনি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা। ডিমের হালি ৫ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১১০ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়। তবে মাছের দাম আগের মতোই রয়েছে। কিছু কিছু সবজির দাম আগের চেয়ে কমেছে।
কাঁঠালবাগান বাজারের ক্রেতা মোরশেদ আলম বলেন, পেঁয়াজ আর রসুন ছাড়া সব জিনিসের দাম বাড়তি। অন্যান্য দেশে করোনায় পণ্যের দাম কমলেও আমাদের দেশ উল্টো নিয়মে চলে। সুযোগ পেলেই ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন। সরকার যদি কঠোর নজরদারি করত তাহলে আমাদের ওপর এত চাপ পড়ত না।
রাজধানীর বিভিন্ন বিপণি বিতান ঘুরে দেখা যায়, সেখানে ক্রেতা-দর্শনার্থীর চাপ আগের চেয়ে অস্বাভাবিকভাবে কমেছে। কমেছে বিক্রিও। বিক্রেতারা জানান, গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত বেচাবিক্রি কিছুটা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ১৬ মার্চ থেকে অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বিক্রি ৬০-৭০ শতাংশ কমেছে। যমুনা ফিউচার পার্কের একটি ঘড়ির দোকানের সহকারী ব্যবস্থাপক সোহেল রানা বলেন, আগে যেখানে গড়ে প্রতিদিন ৫ লাখ টাকা বিক্রি করতাম এখন সেখানে এক দেড় লাখ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বসুন্ধরা ফিউচার পার্কে আসা হাসিব বিল্লাহ বলেন, বাইরে বের হওয়াই এখন অনিরাপদ। কিন্তু হঠাৎ মোবাইলের চার্জার নষ্ট হওয়ায় আসতে বাধ্য হয়েছি।