সিরিয়ায় ২ তুর্কি সেনা নিহত
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিবের নিরাপদ জোনে রকেটে হামলায় তুরস্কের দুই সেনা নিহত হয়েছেন ও অপর একজন আহত হয়েছেন বলে জানায় তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় আরো জানায়, যে অঞ্চলে রকেটে হামলা হয়েছিল, তাৎক্ষণিক সেটি নির্ধারণ করে পাল্টা আক্রমণ করা হয়।
এদিকে, একটি টুইটার পোস্টে তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার নিহত সৈন্যদের পরিবার ও জাতির প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ও রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি মস্কোতে এক যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছেন। সম্প্রতি তুরস্কের সামরিক বাহিনী ও সিরিয়ার শাসক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষেই বহু লোক মারা গিয়েছিল, এর পরেই এ যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা হয়।
চুক্তিতে বলা হয় ইদলিবে সমস্ত সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করা হবে ও এখানে একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে।
এখনো কোনো দেশ কিংবা গোষ্ঠী বৃহস্পতিবারের রকেট হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে তুরস্কের দাবি, রুশ সমর্থিত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীই এই হামলা চালিয়েছে। এর আগে গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইদলিবে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান শুরু করে দেশটির সরকারি বাহিনী। এ ক্ষেত্রে তাদের সমর্থন দেয় রাশিয়া।
অন্যদিকে শরণার্থী সমস্যার কারণে এই অভিযানের বিরোধিতা করে তুরস্ক। আর তাতে তুর্কিদের প্রতি সমর্থন জানায় যুক্তরাষ্ট্র। একপর্যায়ে রুশ সমর্থিত সিরীয় বাহিনীর সঙ্গে তুমুল সংঘাতে জড়ায় তুর্কি সেনারা। এমন অবস্থায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ইদলিবে তুর্কি সেনাদের ওপর বিমান হামলা চালায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। এতে ৩৪ জন তুর্কি সেনা নিহত হন।
ওই হামলার পরপরই সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। আর ওই বৈঠকের পরই সিরিয়ার ইদলিবে অপারেশন ‘স্প্রিং শিল্ড’ পরিচালনার ঘোষণা দেয় তুরস্ক। এই অভিযানে কয়েকশত সিরীয় সেনা নিহত হন।
রকেট হামলায় সেনা নিহতের প্রতিশোধ নিতে তুরস্ক যদি এবারও এ ধরনের অভিযান শুরু করে তবে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। তাছাড়া এখনো সিরিয়ায় অসংখ্য তুর্কি সেনা মোতায়েন রয়েছে। প্রয়োজনে যে কোনো মুহূর্তেই অভিযান শুরু করতে পারেন তারা। তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার এ ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছার জন্য তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজেই রাশিয়ায় গিয়ে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা চাই সিরিয়ার পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকুক। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে তুর্কি সেনাদের ওপর হামলা চালানো হলে সেটা আমরা সহ্য করব না। এর কঠিন প্রতিশোধ নেওয়া হবে।