মুজিববর্ষ পালনের নামে দেশব্যাপী চলছে চাঁদাবাজি — রুহুল কবির রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মুজিব বর্ষ পালনে দেশের সাধারণ মানুষকে বাধ্য করা হচ্ছে। সেইসাথে এই বর্ষ পালনকে ঘিরে দেশব্যাপী চলছে তুঘলকি কাণ্ড ও চাঁদাবাজির মহোৎসব।
বুধবার, মার্চ ৪, ২০২০ সকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, মুজিব জন্ম শতবার্ষিকী পালন নিয়ে চলছে তুঘলকী কাণ্ড। মুজিব জন্ম শতবার্ষিকী নিয়ে সারাদেশে চলছে চাঁদাবাজীর মহোৎসব। ব্যবসায়ীদের দিন কাটছে চাঁদাবাজদের আতংকে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যতই বলুন না কেনো ‘মুজিববর্ষের নামে চাঁদাবাজির দোকান দেয়া যাবে না’-কিন্তু এটি তাব মুখের কথা, বাস্তবে এর কোন প্রতিফলন নেই। এখানেই থেমে নেই, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন মুজিববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর প্রতিটি বাড়ির দেয়াল রং ও সংস্কার করতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সাধারণ মানুষকে বাধ্য করা হচ্ছে এই বর্ষ পালনে।
তিনি বলেন, এভাবে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ টাকা খরচের উদ্যোগ নিয়েছে তাতে সবাই হতবাক। যেখানে দেশের তরুণ সমাজ বেকারত্বে ধুকছে, মানুষ অর্ধাহার-অনাহারে দিনযাপন করছে সেখানে এভাবে অর্থ খরচ নিয়ে জনগণের মনে প্রশ্ন জাগছে।
রিজভী আরও বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যেকোনো মূল্যে তাকে ঢাকায় আনার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে দিল্লিতেও গণহত্যার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী কি এখন বাংলাদেশের মানুষের সেন্টিমেন্ট উপলব্ধি করতে পারছেন? দিল্লিতে সুপরিকল্পিতভাবে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এটি কেবল বাংলাদেশের মানুষের বক্তব্য নয়, মঙ্গলবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও সমাবেশে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি বরং সুপরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালানো হয়েছে। নিজ দেশেই যে রক্ত ঝরছে সেটিকে বন্ধ না করে মোদি যে বাংলাদেশে আসছেন সেটি কি এদেশের মানুষকে উপহাস করা নয়? এই প্রশ্ন এখন মানুষের মুখে মুখে।
রিজভী বলেন, দেশের জনগণের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার জন্য এই সরকারের উচিত ছিল ভারতে গণহত্যার প্রতিবাদ করা। মুসলিম বিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক ও বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করা। অথচ সেটি না করে সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, দিল্লির গণহত্যা আর নাগরিকত্ব আইন নাকি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
রিজভী বলেন, আমরা স্পষ্ট করেই বলতে চাই, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ আমাদেরকে কারো কাছে মাথা বিকিয়ে দিতে নয়, আত্মমর্যাদাশীল হতে শিখিয়েছে। মাথা উঁচু করে চলতে শিখিয়েছে। রক্তস্নাত পথে পাওয়া স্বাধীনতাকে নিশ্চয়ই কারো কাছে বিকিয়ে দেয়ার জন্য নয়।