মোদির বাংলাদেশ সফর নিয়ে নানা প্রশ্ন ফখরুলের
এই মুহূর্তে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর কতটুকু শোভনীয় প্রশ্ন তুলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি নানা প্রশ্ন তুলেন। মোদি সাহেব আসছেন পাশের দেশ থেকে। ভালো কথা, কিন্তু আমাদের সমস্যার সমাধান কতটুকু করছেন বলেও প্রশ্ন তুলেন তিনি।
মোদিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি কখন আসছেন, যখন দিল্লিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উপস্থিত রয়েছেন ও সেই সময়ে নিকৃষ্টতম সহিংসতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবং অভিযোগ আসছে বিভিন্ন মহল থেকে এই সহিংসতার সাথে আপনার দল অভিযুক্ত। সেই সময় আপনার বাংলাদেশে আসাটা কতটুকু শোভনীয় হচ্ছে সে বিষয়ে চিন্তা করা দরকার।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের সরকার আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা একে একে সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপি চেয়ারপারসন নয়, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, তাকে আজকে বেআইনিভাবে, অন্যায় ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটক করে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা সুযোগ দিচ্ছে না। তার জামিন পাওয়ার অধিকার, সে অধিকারটুকু তাকে দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার জনগণের ম্যান্ডেট না নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে চেতনা সেটাকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। তারা প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আজকে শুধু আব্দুর রবকে ভুলে যাচ্ছে না, স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা অবদান রেখেছিলেন তাদেরকে স্মরণ করেন না। তার চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, তাকেও তারা মনে করে না। মনে করে না তারা এমএজি ওসমানীকে, মনে করেনা মওলানা ভাসানীকে। তারা কখনোই স্বীকার করতে চায় না এই স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে দেশের সমস্ত মানুষ জড়িত ছিল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসম আব্দুর রবকে কেন সম্মান জানানো হচ্ছে না বলে অনেকে আক্ষেপ করেছেন। কেন এটি দিবসটি পালন করা হচ্ছে না, এটাতো রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করা। কিন্তু এখন যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের সঙ্গে স্বাধীনতার কতটুকু সম্পর্ক সেটা এখন জনগণের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকের একাত্তরের সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের যে চেতনা, যুদ্ধের পরে মানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল, এবং বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে মানুষ যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল তার আশা-আকাঙ্ক্ষা এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি।
এসময় তিনি বলেন, আজকে আমাদেরকে শপথ নিতে হবে এই দেশকে যেমন হাজার ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলাম, আজকে আবারো আমাদের প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হোক স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে। আসুন আজকে আমরা যারা দেশকে ভালবাসি, গণতন্ত্রকে ভালবাসি তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবানলের মত একটা শক্তি সমস্ত কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে, তাকে আমরা পরাজিত করে। জনগণের শাসনকে প্রতিষ্ঠা করি।
এসময় জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব, কৃষক-শ্রমিক জনতা পার্টির সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রীর ট্রাষ্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।