প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে যে পদ্ধতিটি চালু আছে তা পরিচিত ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ নামে। এই পদ্ধতিতে নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থীদের মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ ভোট পান, তিনিই নির্বাচিত হন। বাংলাদেশে সংসদসহ অধিকাংশ নির্বাচনে দীর্ঘদিন ধরে চর্চিত হয়ে আসছে এই পদ্ধতিটি।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ জনগণই যেহেতু ক্ষমতার উৎস, সেহেতু নির্বাচন হতে হবে এমন একটি ব্যবস্থায় যা জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়, এবং যার প্রতি মানুষের বিশ্বাস আছে।
পিআর পদ্ধতির মতো একপাক্ষিক প্রস্তাব গণতন্ত্রকে এগিয়ে না নিয়ে, বরং বিভ্রান্ত করবে।
সুতরাং ছোট ছোট কিছু রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবিত পিআর পদ্ধতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি ষড়যন্ত্র, যা দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ আরও স্পষ্ট করে যদি বলি তাহলে বলবো যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনেক ছোট ছোট রাজনৈতিক দল ধর্মকে ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেছে। পিআর পদ্ধতি চালু হলে এসব দল সংসদে প্রবেশ করে জাতীয় রাজনীতিকে জিম্মি করতে পারে। যেমন- ১/ তারা ধর্মীয় আবেগকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক বিভাজন বাড়াবে। ২/ নীতি নির্ধারণে জাতীয় স্বার্থ নয়, বরং স্বার্থান্বেষী এজেন্ডা গুরুত্ব পাবে। ৩/ ধর্মীয় সহিংসতা ও সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ বাংলার সংস্কৃতি বরাবরই সহাবস্থান ও সম্প্রীতির। কিন্তু ধর্মভিত্তিক লেজুড়বৃত্তিক দলগুলো সংসদে অতিরিক্ত ক্ষমতা পেলে সেই ঐতিহ্য ভেঙে যাবে।
পরিশেষে বলবো, পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে জনগণকেন্দ্রিক নির্বাচন ব্যবস্থার দিকে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের মনোযোগ দেওয়া এবং সেইসাথে জাতীয় স্বার্থে গঠনমূলক সংলাপ ও সমঝোতার পথ বের করে জনগণের কাঙ্ক্ষিত অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন জরুরি।
ডালিয়া লাকুরিয়া
প্রচার-সম্পাদক
যুক্তরাজ্য, বিএনপি।