অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে গণঅধিকার পরিষদের শতাধিক নেতাকর্মীর পদত্যাগ

0

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে নওগাঁয় জেলা-উপজেলার বিভিন্ন ইউনিটের শতাধিক নেতাকর্মী একযোগে পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে শহরের প্যারীমোহন সাধারণ গ্রন্থাগার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি এবাদুল ইসলাম। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি আখতারুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি শাকিব খানসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা।

নওগাঁ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি এবাদুল ইসলাম বলেন, সংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সম্পূর্ণভাবে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। নীতি, নৈতিকতা ও আদর্শের কথা বলে সংগঠন শুরু হলেও বর্তমানে তা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্যুত হয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সম্পূর্ণভাবে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। যারা মাঠে-ময়দানে সর্বস্ব দিয়ে সংগঠন গড়ে তুলেছেন তাদের কোনো মূল্যায়ন নেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্বৈরাচারী আচরণ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক এবং অপমানজনক।

তিনি আরও বলেন, দলের অভ্যন্তরে মতামতের কোনো মূল্য নেই। ওপর থেকে একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি নওগাঁ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সব অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মৌখিক ভোট উপেক্ষা করে জেলা কমিটি গঠনের জন্য একটি উপ-কমিটি গঠন করা হলেও তাদের সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা না করে অলৌকিক ক্ষমতায় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যা ওই উপ-কমিটিই জানে না। মূল সংগঠন গণঅধিকার পরিষদ হলেও নিয়ন্ত্রণ করছে অঙ্গ সংগঠন যুব অধিকার পরিষদ। যা সম্পূর্ণ সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কমিটি গঠনে কমিটি বাণিজ্য হয়েছে। কোনো কর্মসূচি করতে হলে কেন্দ্রীয় নেতাদের আনতে জেলা থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে বলা হয়। যা এক প্রকার চাপ ও অবিচার। নতুন ধারার রাজনীতির কথা বলে সংগঠন শুরু হলেও বর্তমানে পুরোনো ধ্যান ধারণা ও আচরণেই চলছে সব কিছু। শুধু নওগাঁ জেলা নয়, রাজশাহী বিভাগীয় কমিটি ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে সংগঠনের প্রতিনিয়ত ক্ষতি করে যাচ্ছে। রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কবির, গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য আমিনুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় সংসদ যুব অধিকার পরিষদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এস এম সাব্বিরের সব প্রকার অনৈতিক কাজকে প্রশ্রয় দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বর্তমান সংগঠন তার মূল পথ ও উদ্দেশ্য থেকে সরে এসেছে। তাই নিজের আত্মমর্যাদা, রাজনৈতিক আদর্শ ও তৃণমূল কর্মীদের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই এই সংগঠন থেকে শতাধিক নেতাকর্মী সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নওগাঁ জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি শাকিব খান বলেন, নওগাঁ জেলায় গণঅধিকার পরিষদের কমিটিতে অযোগ্য ব্যক্তিকে সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে। এখানে স্বজনপ্রীতি করে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমান কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে আমরা নওগাঁ জেলাতে গণঅধিকার পরিষদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। গণঅধিকার পরিষদের অস্তিত্ব নওগাঁতে থাকবে না।

সংবাদ সম্মেলনে নওগাঁ জেলার গণঅধিকার পরিষদ, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও যুব অধিকার পরিষদের জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রত্যেকেই সংগঠনের বর্তমান কমিটি ঘোষণার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.