ভারতে পরিকল্পিত মুসলিম গণহত্যা চলছে; দর্শকের ভূমিকায় বাংলাদেশ-বিশ্বসমাজ: আল্লামা কাসেমী

0

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, আমরা গভীর উদ্বেগ, বেদনা ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ভারতে নতুন নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জি তৈরির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদের কারণে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের উপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

আজ (২৬ ফেব্রুয়ারী) বুধবার এক বিবৃতিতে জমিয়ত মহাসচিব আরো বলেন, ভারতের রাজধানী দিল্লিতে প্রায় ৩-৪ দিন ধরে পদ্ধতিগত এই হত্যা চললেও দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আদালত, রাজ্য সরকার; কেউই তা থামাতে এগিয়ে আসেনি- যা বিশ্বজুড়ে বিস্ময় তৈরি করেছে। এমনকি আহতদের হাসপাতালেও নেওেয়া যাচ্ছে না হামলার ভয়ে।

আল্লামা কাসেমী বলেছেন, আমরা এও দেখছি, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং উপাসনালয়ের নিরাপত্তা বিশ্বজুড়ে একটা স্বীকৃতি মৌলিক মানবাধিকার হলেও দিল্লীতে একের পর মসজিদে হামলা চলছে। সেখানে মসজিদের মিনারগুলোতে হিন্দুধর্মীয় প্রতীক স্থাপন করা হচ্ছে। যা মুসলমানদের ঈমান-বিশ্বাস-অনুভূতির প্রতি চরম অবমাননাকর। ভারতে যে গুটিকয়েক নিরপেক্ষ প্রচারমাধ্যম রয়েছে তাদের কর্মীরা সংবাদ সংগ্রহকালে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন এবং হামলার শিকার হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, স্পষ্টতই এটা যে পরিকল্পিত ও পদ্ধতিগত গণহত্যা তা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে এসব বিভৎস হামলা দেখে।

আল্লামা কাসেমী আরো বলেন, আমরা আরও দেখছি, পদ্ধতিগত এই হত্যা চালানোর সময় বাংলাদেশের সরকারসহ বিশ্বসমাজ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এই হামলার সময় দেশটিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট উপস্থিত থাকলেও তিনি এ বিষয়ে উচ্চবাচ্য প্রকাশ করেননি। যা আমেরিকার গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তির জন্য চরম লজ্জাজনক।

তিনি বলেন, আমরা এটা জেনেও গভীরভাবে উদ্বেগ করছি যে, বাংলাদেশ সরকার এই গণহত্যার জন্য প্রধানতম দায়ী ব্যাক্তি নরেন্দ্র মোদিকে শিগগির বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সফরের জন্য। যা এ মুহূর্তে বাংলাদেশের মুসলমান জনগোষ্ঠীর জন্য চরম উস্কানিমূলক। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির শান্তি-শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটূট রাখার স্বার্থে এবং আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে মুসলিমবিদ্বেষী লাগাতার অপতৎপরতার প্রতিবাদে জালেম মোদির বাংলাদেশ সফর বাতিল করা সরকারের অপরিহার্য কর্তব্য মনে করি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের শান্তিকামী মানুষ গুজরাটের কসাইখ্যাত দিল্লি গণহত্যার খলনায়ক ও মারাত্মক সাম্প্রদায়িক বিভাজনকারী নরেন্দ্রমোদিকে বাংলাদেশের মাটিতে কোনক্রমেই মেনে নিবে না।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী আরো বলেন, আমরা ভারতীয় এই গণহত্যা থামানোর জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দাবি জানাচ্ছি। আমরা মনে করি রাষ্ট্রীয়ভাবে একই দাবি তুলে ধরা বাংলাদেশ সরকারের একটা নৈতিক, ধর্মীয় ও সাংবিধানিক দায়িত্ব। সাংবিধানিকভাবে বিশ্বের নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বাংলাদেশের দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে ভারতীয় এই গণহত্যার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ ও অহিংস প্রতিবাদের আহ্বান জানাই। আমরা মনে করি, চরম উস্কানি সত্ত্বেও এ মুহূর্তে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করে আমরা আবারও বিশ্বের কাছে সাম্প্রদায়িক শান্তির উজ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবো এবং একই সঙ্গে ভারতীয় গণহত্যার বিরুদ্ধেও জোরালো প্রতিবাদ জানাতে ভুলবো না।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com