নির্বাচনের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন শেখ হাসিনা: মেজর হাফিজ

0

নির্বাচনের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন শেখ হাসিনা জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য অগ্নিপরীক্ষা। নির্বাচনে হয়তো জনগণ আপনাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে পারে। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামী লীগ যা করেছে আমরাও যদি তা করি, তাহলে আওয়ামী লীগ ১৫ বছর টিকেছে, আমরা ১৫ দিনও ক্ষমতায় টিকতে পারবো না।

মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, “বিএনপি অবশ্যই ক্ষমতায় যাবে। কিন্তু বিএনপি যাতে ক্ষমতায় না যেতে পারে, তারা যেন ক্ষমতার চিটেফোঁটা পেতে পারে, এ জন্য তারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। বাংলাদেশের জনগণ এ পদ্ধতি বোঝে না। তারা একজন ব্যক্তিতে দেখতে চাই তাদের প্রতিনিধি হিসেবে। সুতরাং এ পদ্ধতি জনগন চাই না। জনগনের সরাসরি নির্বাচন ছাড়া কোন জনপ্রতিনিধি এ দেশে আনা ঠিক হবে না।”

শনিবার ( ৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাব ব্যাংকুয়েট হলে ‘৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শহিদ জিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

হাফিজ বলেন, “একটি রাজনৈতিক দল জনগণকে ভুল বোঝানো ও নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য নানা ধরনের কল্প-কাহিনী প্রচার করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। যেহেতু তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে কাজ করতে হবে। প্রতিটি নেতাকর্মীকে শহীদ জিয়ার আর্দশে উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা-নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণের জন্য কাজ করতে হবে।”

মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র প্রসঙ্গে মেজর হাফিজ বলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বিকৃত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর শেখ মুজিব যেমন বাকশাল প্রতিষ্ঠার পায়তারা করেছিলেন, ঠিক তেমনি আজও ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। আমি গর্ব করে বলতে পারি, বিএনপি ও বিএনপির হাজারো নেতাকর্মী একাত্তরের মতো ২০২৪ সালেও বুক পেতে দিয়েছেন। যাদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা মুক্ত।”

একাত্তরের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন লুঙ্গি ও গামছা পরা খেটে খাওয়া অসহায় বাঙালি। কিন্তু স্বাধীনতার পর দেখলাম, বড়লোকের ছেলেরা মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় নিয়ে নিয়েছে।”

নির্বাচন ঘোষণার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “ড. ইউনূস অভিজ্ঞ মানুষ হলেও তার উপদেষ্টা পরিষদের অনেকের রাষ্ট্র চালানোর যোগ্যতা নেই। কেউ কেউ গদি ছাড়তে চাননি। কেউ কেউ পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন।”

মেজর হাফিজ বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন একটা স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। অর্থাৎ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে বাতাস সেটা বইতে শুরু করেছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনকে নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র তৈরি করে যাচ্ছে। বিভিন্ন রকম বয়ান তৈরি করেছে। আপনারা যদি বলেন, নির্বাচনে অংশ নেব না, নির্বাচনে এইটা করতে হবে- সেইটা করতে হবে। অথচ আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাই ঘোষণাপত্র দিয়েছি: সুতরাং আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান জানাতে চাই সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে। আমরা যদি উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি এবং একে অপরের সম্প্রীতি বজায় রেখে নির্বাচনে অংশ নেই তাহলেই আমরা একটা সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে পাবো। আমরা স্পষ্ঠ করে বলে দিতে চাই হাসিনার আমলের সেই ডামি নির্বাচন আর এই বাংলাদেশে হবে না। ওই নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না।”

পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “নির্বাচনের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেনি। গণতন্ত্রকে তারা ছুড়ে ফেলে দিয়ে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে।”

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল খুলনা মহানগর ও জেলা শাখা এই সভার আয়োজন করে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.