মাটিতে লিভারপুল পিএসজিকে হারালেন রেকর্ডবয় হালান্ড

0

দুর্বার লিভারপুলকে মাটিতে নামাল আতলেতিকো মাদ্রিদ। যে মাঠ থেকে গতবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল জিতেছিল লিভারপুল, সেই ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানো স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের ১-০ গোলে হারিয়েছে আতলেতিকো। ডিয়েগো সিমিওনের পুরনো ধাঁচের কৌশলের কাছে হার মেনেছেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ১১ মার্চ ফিরতি লেগের খেলায় জিততেই হবে তাকে।

একই রাতের অন্য ম্যাচে হেরেছে পিএসজিও। নিজেদের মাঠে ২-১ গোলে নেইমার-এমবাপেদের হারিয়ে দিয়েছে তারা। তারকাদের ছাপিয়ে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন নরওয়েজিয়ান তরুণ আর্লিং ব্রট হালান্ড। জার্মান ক্লাবের হয়ে একাই দুই গোল করেছেন এই রেকর্ডবয়।

অ্যানফিল্ডে স্বাগতম : ক্লপ

চলতি মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এক ম্যাচও হারেনি। তাদের অজেয় থাকার দৌড়টা গত মৌসুম থেকে শুরু। গতবারের ১৭ ম্যাচসহ এবার ২৬ ম্যাচ মোট ৪৩ ম্যাচে অজেয় তারা। আর সাত ম্যাচে এই ধারাবাহিকতা রাখলে প্রিমিয়ার লিগে সর্বকালের ইতিহাস আর্সেনালের টানা ৪৯ ম্যাচ অজেয় থাকার রেকর্ড টপকে যাবে লিভারপুল।

এমন দলের বিপক্ষে সম্ভবত সবচেয়ে নেতিবাচক ফুটবল কৌশলই করবে যে কোনো কোচ। তার ওপর আতলেতিকোর চলতি মৌসুমের পারফরম একদমই সাদামাটা। তাই নেতিবাচক কৌশল ছাড়া লিভারপুলকে আটকানোর পথ ছিল না সিমিওনের। ৪র্থ মিনিটেই কর্নার থেকে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সল নিগুয়েজের গোল পাওয়ার পর পুরোপুরি রক্ষণে মনোযোগী হওয়ার কৌশল দিয়ে বাজিমাত করেও নেন এই আর্জেন্টাইন। অবশ্য লিভারপুল দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ মিস না করলে ফল ভিন্নও হতে পারত। গোল করার খুব কাছে গিয়েও হতাশ হয়েছেন মোহামেদ সালাহ ও অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসন।

মঙ্গলবারের ম্যাচের আগে চলতি মৌসুমে লিভারপুল হেরেছিল দুই ম্যাচ ডিসেম্বরে লিগ কাপে অ্যাস্টন ভিলার কাছে (৫-০), আর ১৭ সেপ্টেম্বর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ ম্যাচে নাপোলির কাছে (৩-০)। নাপোলির কাছে হারটা ছিল প্রতিপক্ষের মাঠে। আর এখানেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুর্বল লিভারপুল। প্রতিপক্ষের মাঠে সর্বশেষ ১১ ম্যাচের ৭টিতেই হারল তারা। তবে এখনো শেষ হয়ে যায়নি কিছু জানিয়েছেন ক্লপ। জয়ের জন্য দ্বিতীয় লেগে অনেক কিছু করতে হবে বলে মনে করেন না তিনি, ‘আমাকে খেলার প্রতি আরেকটু মনোনিবেশ করতে হতে পারে। আমাদের লোকেরা প্রস্তুত থাকবে। অ্যানফিল্ডে স্বাগতম!’

হালান্ড শো!

ফর্মের তুঙ্গে থাকা হালান্ড মাত্র আট মিনিটের মধ্যে দুই গোল করেন। তার ৬৯ ও ৭৭ মিনিটের গোলের মাঝে ৭৫ মিনিটে এক গোল শোধ দেন নেইমার। ডর্টমুন্ডের জার্সিতে ৭ ম্যাচে ১১ গোল পেলেন হালান্ড। এছাড়া ডর্টমুন্ডের একমাত্র ফুটবলার হিসেবে বুন্দেসলিগা, জার্মান কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই গোল করার অনন্য কীর্তি গড়লেন। জানুয়ারিতে দলবদলে ক্লাবটিতে আসার আগে এই তরুণের দল ছিল অপর জার্মান ক্লাব সালজবুর্গ। তারাও চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্বে খেলেছে। ওই দলের হয়ে ৬ ম্যাচে ৮ গোল করেছিলেন হালান্ড। তাই ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ৭ ম্যাচে তার গোল হলো ১০। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে ১০ গোলের রেকর্ড এটি। এছাড়া কিলিয়ান এমবাপের পর দ্বিতীয় ‘টিনেজার’ হিসেবে এই লিগে ১০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। এমবাপে দুই মৌসুম মিলিয়ে ওই উচ্চতায় উঠলেও হালান্ড এক মৌসুমেই ১০ গোল করে ফেললেন। ‘আজকের জয় দারুণ ছিল। এজন্যই আসলে আমরা ফুটবল খেলি। সত্যিই উপভোগ করেছি। এই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আরও দূর যেতে চাই। আমাদের কাজ শেষ হয়নি। ১১ মার্চ পিএসজির মাঠে ম্যাচটি কঠিন হবে। সেই ম্যাচে আমাদের আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।’ ১১ মার্চ ফিরতি লেগে একটি অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা পাবে পিএসজি। সেক্ষেত্রে ১-০তে জিতলেই কোয়ার্টার নিশ্চিত হবে তাদের। কিন্তু হালান্ডের গোলক্ষুধা থামাতে পারবেন কি প্যারিসিয়ানরা?

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com