এক দশকে বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয়ে রেকর্ড

0

এক দশকের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে ২০১৯ সালে। গত বছর বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বেড়েছে চার শতাংশ। বিগত ১০ বছরের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ।

ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) বার্ষিক প্রকাশনা দ্য মিলিটারি ব্যালেন্সে এ হিসাব উঠে এসেছে। প্রকাশনাটি শুক্রবার মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে প্রকাশ করা হয়েছে।

ইউরোপেও সামরিক খাতে ব্যয় ঊর্ধ্বমুখী, যা ২০১৮ সালের তুলনায় চার দশমিক দুই ভাগ বেশি। এটিকে অনেকেই মনে করেন বৈশ্বিক পরিবর্তনের একটি প্রতিচ্ছবি এবং রাষ্ট্র বনাম রাষ্ট্রের যে প্রতিযোগিতা তারই ফল। খবর এএফপির।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সামরিক ব্যয় বেড়েছে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ। যদিও সবচেয়ে বেশি বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রেরই। সেই তুলনায় চীনের বৃদ্ধির হার কম।

বেইজিংয়ের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির জেরে কয়েক বছর ধরেই এশিয়ায় সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এই অঞ্চলে জাতীয় আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গত এক দশকে সামরিক ব্যয়ও ৫০ শতাংশ বেড়েছে।

সামরিক হিসাব থেকে দেখা যায়, সামরিক বিতর্ক হচ্ছে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাজনিত অস্থিতিশীলতার কারণেই। স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির বিষয়টিকেই উদাহরণ হিসেবে দেখা যেতে পারে।

মিলিটারি ব্যালেন্সে দেখা যাচ্ছে, আইএনএফ চুক্তির বিদায়ের পর চীনা অস্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যদিও প্রকৃত চুক্তির অংশীদার চীন ছিল না। মিলিটারি ব্যালেন্স বলছে, পর্যবেক্ষকরা হতাশাজনক দৃষ্টিতেই মস্কো ও ওয়াশিংটনের দিকে তাকিয় আছে যে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের চুক্তি নবায়ন হয় কিনা।এর মেয়াদ শেষ হয়েছে এক বছর আগেই। আবার রাশিয়ার আচরণ নিয়ে অস্বস্তিতে থাকার কারণে সামরিক ব্যয় বাড়ছে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোতে। ইউরোপে তাই সামরিক ব্যয় বাড়ছে।

তবে সেখানে সামরিক ক্রয়, গবেষণা ও উন্নয়ন খাতেই বেশি ব্যয় হচ্ছে। জার্মানি বলছে, ইউরোপে সামরিক ব্যয় বাড়ার মূল কারণ জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

২০১৮ ও ১৯ সালে জার্মানে সামরিক ব্যয় বেড়েছে সাড়ে নয় শতাংশের বেশি। যদিও জিডিপির দু’ভাগ ব্যয়ের যে টার্গেট ঠিক করেছে ন্যাটো তা থেকে পিছিয়ে আছে দেশটি।

মিলিটারি ব্যালেন্সের হিসাবে ন্যাটোর সাত সদস্য লক্ষ্য অর্জন করছে। তারা হল, বুলগেরিয়া, গ্রিস, এস্তোনিয়া, রোমানিয়া, লাটভিয়া, পোল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য।

এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে সামরিক প্রযুক্তি ও সিস্টেমের। অত্যাধুনিক রোবট ও ড্রোন বা আন-আর্মড ভেহিক্যাল (ইউএভি) এখন ব্যবহৃত হচ্ছে।

আর প্রতিপক্ষের হামলা ব্যর্থ করতে এসেছে অ্যান্টি ইউএভি সিস্টেম। রাশিয়া ও চীন হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিক্যালস ও হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল মোতায়েন প্রক্রিয়ায় আছে। এটি সুপার ফাস্ট সিস্টেম যা চলমান মিসাইল ডিফেন্সের কার্যকারিতাকেই শেষ করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ বছরের মিলিটারি ব্যালেন্সে দেশগুলোর কৌশলগত অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রগুলো ঠিক যুদ্ধে না গিয়েও কৌশল সেরকমই নির্ধারণ করছে যা উদ্বেগ তৈরি করছে।

যেমন রাশিয়ার ক্রিমিয়া আগ্রাসন এবং যুক্তরাজ্যে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ। নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগের মতো বিষয়গুলোও এসেছে মিলিটারি ব্যালেন্সের পর্যালোচনায়। এতে উঠে এসেছে ইরানের তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যুদ্ধ (প্রক্সি ওয়ার) চালানোর সক্ষমতার বিষয়ও।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com