কবি আল মাহমুদের চোখে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
জিয়াউর রহমান খুব হিরোইক লোক ছিলেন। অসাধারণ মেধাবী মানুষ এবং তার দেশপ্রেমের কোনো তুলনাই হয় না। তিনি চেষ্টা করেছেন দেশটাকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে একটা গোড়াপত্তন করার। এবং ভারতের পাশে একটা রাষ্ট্রের স্বাধীন থাকার যেসব উপাদান দরকার, তিনি সেটা আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত করারও চেষ্টা করেছেন। তার একটা চমৎকার ধারণা ছিল বাংলাদেশ সম্পর্কে। আমি তাকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। আমার উপলব্ধি যে, জিয়াউর রহমান তার ব্যক্তিগত চারিত্রিক দৃঢ়তা ও দেশপ্রেমের জন্য জনগণের সমর্থন পেয়েছেন। জিয়াউর রহমান যদি আরো কিছু দিন থাকতেন, তাহলে দেশের চেহারা পরিবর্তিত হয়ে যেত, সে বিশ্বাস আমার এখনো আছে। পরবর্তী সময়ে তার মতো যোগ্য লোক বিএনপিতে ছিল না, এখনো নেই।
আল মাহমুদ ছিলেন জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপাতি। বিএনপির এই অঙ্গসংগঠনটি সম্পর্কে তিনি বলেন, “জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) প্রথম দিকে বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছিল না। এটা একটা আলাদা সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছিল। জিয়াউর রহমান আমাকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছিলেন একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য। তিনি ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে মুক্তির জন্য একটি সাংস্কৃতিক কণ্ঠস্বর তৈরি করতে চেয়েছিলেন। গান-বাজনায়, সাহিত্যে, শিল্পে এটা তৈরি করতে চেয়েছিলেন। সেই জন্য তিনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে এটা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আমি জাসাসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হয়েছিলাম। তিনি যতদিন ছিলেন, আমি ছিলাম। কিন্তু তার মৃত্যুর পর যখন এটা বিএনপির অঙ্গসংগঠন হিসেবে পরিণত হলো, তখন আমি এতে আর থাকিনি। কারণ, আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতির চর্চা করি না। আমি সাহিত্যের মানুষ।”
আর জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কটা কীভাবে গড়ে ওঠে, সে সম্পর্কে তিনি বলেন, “একবার উনি আমাকে ডেকে পাঠান এবং ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে আলাপ করেন। আমাকে জাসাসের সভাপতি হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সেই সময় প্রফেসর বদরুদ্দোজা চৌধুরী আমাকে খুব উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। এটা আমার মনে আছে খুবই যে, তিনি বলেছিলেন ‘এটা আপনাকে করতে হবে।’ আমি করেছিলাম। জিয়াউর রহমানের সঙ্গেও আমার বহু বিনিময় হয়েছে। কথাবার্তা হয়েছে। আমি তাকে অত্যন্ত দেশপ্রেমিক এক মহৎ হৃদয়ের মানুষ মনে করি। রাষ্ট্রনায়কসুলভ সব গুণই তার ছিল।”
আল মাহমুদ’
প্রকাশঃ ১২-০৭-২০১৩