মুক্তির একমাত্র উপায় ইমান ও তাকওয়া
সুরা মুদ্দাসসির কোরআনের ৭৪ তম সুরা। মক্কায় ইসলামের প্রাথমিক যুগে অবতীর্ণ এ সুরাটির আয়াত সংখ্যা ৫৬, রুকু সংখ্যা ২। ‘মুদ্দাসসির’ অর্থ বস্ত্রাবৃত। এ সুরার প্রথম আয়াতে নবিজিকে (সা.) ‘মুদ্দাসসির’ বা ‘বস্ত্রাবৃত’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
হাদিসে এসেছে, হেরা গুহায় প্রথম অহি অবতীর্ণ হওয়ার সময় নবিজি (সা.) বেশ ভয় পেয়েছিলেন। এরপর কিছুদিন ওহি আসা বন্ধ ছিল। একদিন পথ চলার সময় নবিজি (সা.) আওয়াজ শুনে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখেন, হেরা গুহায় দেখা সেই ফেরেশতা অর্থাৎ জিবরাইল (আ.) আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে একটি ঝুলন্ত চেয়ারে বসে আছেন। তাকে দেখে নবিজি (সা.) ভয় পেয়ে যান এবং ঘরে ফিরে বলেন, আমাকে বস্ত্ৰাবৃত করে দাও। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নবিজিকে ‘বস্ত্রাবৃত’ বলে সম্বোধন করা হয়।
সুরা মুদ্দাসসিরের ৩৮-৪৮ আয়াতে আল্লাহ বলেন,
(৩৮)
کُلُّ نَفۡسٍۭ بِمَا کَسَبَتۡ رَهِیۡنَۃٌ
প্রতিটি প্রাণ নিজ অর্জনের কারণে দায়বদ্ধ।
(৩৯)
اِلَّاۤ اَصۡحٰبَ الۡیَمِیۡنِ
কিন্তু ডান দিকের লোকেরা নয়,
(৪০)
فِیۡ جَنّٰتٍ یَتَسَآءَلُوۡنَ
বাগ-বাগিচার মধ্যে তারা একে অপরকে জিজ্ঞাসা করবে,
(৪১)
عَنِ الۡمُجۡرِمِیۡنَ
অপরাধীদের সম্পর্কে,
(৪২)
مَا سَلَکَکُمۡ فِیۡ سَقَرَ
কিসে তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করাল?
(৪৩)
قَالُوۡا لَمۡ نَکُ مِنَ الۡمُصَلِّیۡنَ
তারা বলবে, আমরা সালাত আদায়কারীদের দলে ছিলাম না।
(৪৪)
وَ لَمۡ نَکُ نُطۡعِمُ الۡمِسۡکِیۡنَ
আর আমরা অভাবগ্রস্তদের খাওয়াতাম না।
(৪৫)
وَ کُنَّا نَخُوۡضُ مَعَ الۡخَآئِضِیۡنَ
আর আমরা সমালোচনাকারীদের সঙ্গে (সত্যের অনুসারীদের) সমালোচনা করতাম।
(৪৬)
وَ کُنَّا نُکَذِّبُ بِیَوۡمِ الدِّیۡنِ
আর আমরা প্রতিদান দিবসকে অস্বীকার করতাম।
(৪৭)
حَتّٰۤی اَتٰىنَا الۡیَقِیۡنُ
আমাদের কাছে নিশ্চিত বিশ্বাস (অর্থাৎ মৃত্যু) না আসা পর্যন্ত।
(৪৮)
فَمَا تَنۡفَعُهُمۡ شَفَاعَۃُ الشّٰفِعِیۡنَ
অতএব সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোণো উপকার করবে না।
এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই
১. মানুষের মুক্তির একমাত্র উপায় ইমান অর্থাৎ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ও নেক আমল।
২. নামাজ ছেড়ে দেওয়া, জাকাত আদায় না করা বড় পাপ। এ পাপের কারণে মানুষকে জাহান্নামে যেতে হবে।
৩. মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী কারো জন্য কেয়ামতের দিন সুপারিশ করার কোনো সুযোগ থাকবে না। তারা কারো সুপারিশ পাবে না।