কেমন আছেন রফিক-উল হক?
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। দেশের খ্যাতিমান আইনজীবী। ওয়ান ইলেভেনে দুই নেত্রীর পক্ষে আইনি লড়াইয়ে ছিলেন অবিচল। তার সখ্য ছিল বাংলাদেশের প্রায় সব মহীরুহের সঙ্গে। স্ত্রী ছিলেন চিকিৎসক। আর মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছেন উপার্জনের বড় অংশ। ক’ বছর হলো আদালত পাড়ায় দেখা যায় না ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে। ঝড় তুলেন না মিডিয়ার সামনেও।
অনেকটা নীরবে-নিভৃতে দিন কাটছে প্রবীণ এই আইনজীবীর। কেমন আছেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক? ৪৭/১ পুরানা পল্টনের বাসায় টিভি দেখে আর পত্রিকা পড়ে সময় পার করছেন তিনি। অদ্ভুত নীরবতা বাড়ির চারদিকে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা। বাড়ির ভেতর ঢুকতেই জানা গেলো রফিক-উল হক রয়েছেন দোতালার একটি রুমে। চেয়ারে হেলান দিয়ে টেলিভিশন দেখছেন। খবরের খোঁজে রিমোট বাটনে একর পর এক চাপ দিচ্ছেন। পাশেই খাটে পড়ে আছে ৮-১০টি জাতীয় পত্রিকা। সালাম দিতেই পাশে থাকা মোড়ায় বসতে বলেন। কুশল বিনিময় হয়। কেমন আছেন স্যার? ভাল আছি। বয়স হয়েছে তো। এখনতো একটু আধটু…। তবু বলবো ভালো আছি। প্রশ্ন করতে চাইতেই। না না। অন্য কোনো বিষয়ে কথা বলবো না।
তার সহযোগীরা জানান, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক হাঁটতে চলতে তাদের সহায়তা নেন। কখনো কখনো নিচে নামেন। বিকালে একটু হাঁটা হাঁটি করেন। এভাবেই কাটে তার পুরো দিন। বই, পত্রিকা আর টিভি দেখে সময় কাটে তার। পারত পক্ষে বাসা থেকে বের হন না। বের হলেও হুইলচেয়ারই ভরসা। ২০১১ সালে স্ত্রী ডা. ফরিদা হকের মৃত্যুর পর থেকেই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন তিনি। আর এখন বার্ধক্য যোগ হয়ে সেই নিঃসঙ্গতা আরো বেড়েছে। ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২রা নভেম্বর দক্ষিণ কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। কৈশোর শৈশব কেটেছে এই গ্রামেই। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এই সময়ে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে পর পর দুবার সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল যুব কংগ্রেসের সেক্রেটারিও। তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। ছাত্র জীবন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয় তার রাজনীতির জীবন। ১৯৫৮ সালে পাস করেন এলএলবি। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল’ সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৬০ সালে কলকাতা উচ্চ আদালতে আইনজীবী হিসেবে শুরু করেন আইন পেশা। ১৯৬২ সালে ঢাকা হাইকোর্টে যোগদান করেন। ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন তিনি।