পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার: জয়নুল আবেদীন
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, পালিয়ে যাওয়া রাজনৈতিক নেতার রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
এ মুহূর্তে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আপাতত দেওয়া উচিত হবে না।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর এফডিসিতে জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত দলের ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, তারা নির্বাচনে আসলে ব্যাংক, শেয়ার বাজার, মেগা প্রকল্পের লুটের টাকা ও পেশীশক্তি ব্যবহার করে নির্বাচনকে কলুষিত করতে পারে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে শেখ হাসিনার ফাঁসি হলে বা তিনি দেশে না আসলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও বিতর্ক আছে। নিষিদ্ধ করলে বিরাজনীতিকীকরণ হবে কি না এ প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। শুধু আওয়ামী লীগ নয় নিষিদ্ধ করতে হলে তাদের দোসর বাকি ১৪ দলকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। শেখ হাসিনার মাধ্যমে দেশে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। তিনি রাতকে দিন ও দিনকে রাত বললে কিছু লোক এটাকে চোখ বুঝে মেনে নিতো। তাই ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলের মতো ঢালাওভাবে মামলা হলে প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে। এতে সঠিক বিচার পেতে বেগ পেতে হবে। প্রকৃত অপরাধীদেরই বিচার হওয়া উচিত। ন্যায় বিচার না হলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা উঠে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই বিপ্লবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া বহু মানুষকে দাফন কাফন করতেও বেগ পেতে হয়েছে। গুলি করে হত্যার পর মরদেহ স্তূপ করে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনাও ঘটিয়েছে পতিত সরকার। তাই দাবি উঠেছে জুলাই হত্যকাণ্ডে জড়িত দলগুলোর রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করছেন শুধু জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দলগুলোর রাজনীতি নিষিদ্ধ করলেই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে না। বিগত শাসনামলে ৬০ লাখ মানুষের নামে গায়েবি মামলা, ৪ হাজার বিচার বহির্ভুত হত্যা, ৭০০ এর বেশি মানুষকে গুম করা, বিডিআর হত্যাকাণ্ডসহ নানা রকম অপরাধের সঙ্গে যুক্ত বিগত আওয়ামী সরকার ও তার দোসরদের জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পাশাপাশি গত ১৫ বছরের বিচার নিশ্চিত করা গেলেই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।
তিনি বলেন, যে সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ তার বেশিরভাগ মন্ত্রী, এমপি ছাত্র জনতার বিক্ষোভে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। সে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ পত্র কোথায় দিল না দিলো তা নিয়ে জনগণের মাথা ব্যথা নেই। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জুলাই গণহত্যায় শহীদদের কবরে গেলেই খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। শহীদদের নামফলকের পাশেই এ পদত্যাগ পত্র লেখা আছে। এছাড়া গত ১৫ বছরে বিগত সরকারের আমলে যারা বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে সেসব ব্যক্তিদের আত্মাও বলে দিতে পারবে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র কোথায় আাছে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত দলের ভবিষ্যৎ রাজনীতি শীর্ষক ছায়া সংসদে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিতার্কিকদের পরাজিত করে প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।