শান্তি প্রতিষ্ঠায় ফিতনা বর্জন আবশ্যক
সমাজ জীবনের অশান্তি দূর করার লক্ষ্যে বিশ্ব মানবতাকে যারা সত্য ও ন্যায় থেকে বঞ্চিত করতে চায় তাদের প্রতিরোধকল্পে সভ্যতার বিকাশ সাধনের প্রয়োজনে, সুবিচার প্রতিষ্ঠা করার তাগিদে ইসলাম জিহাদের বিধান প্রবর্তন করেছে। ইসলামের নামে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার নাম জিহাদ নয়। আর সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে আল্লাহ তাআলা জিহাদের বিধান প্রবর্তন করেননি। যে ফিতনা মানুষের মাঝে অশান্তি সৃষ্টি করে তা নির্মূলেই জিহাদের বিধান প্রবর্তন করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ১৯৩নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে এ মর্মে নির্দেশ দেন যে, তারা যেন অযথা ফিতনা সৃষ্টিকারীদের প্রতিরোধ করেন। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা জিহাদের মূলনীতি ও তার উদ্দেশ্য তুলে ধরেছেন। কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা উদ্ধার বা প্রতিশোধ গ্রহণই জিহাদের উদ্দেশ্যে নয়; বরং বিশ্ব মানবতার বৃহত্তর কল্যাণেই ইসলাম জিহাদের কল্যাণকর বিধান প্রবর্তন করেছে।
ইতিপূর্বে আল্লাহ তাআলা ফিতনাকে হত্যার চেয়েও জঘন্য অপরাধ সাব্যস্ত করেছেন। আর এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা ফিতনা বলতে এমন অবস্থাকে বুঝিয়েছেন যে, ফিতনার দ্বারা যদি আল্লাহর হুকুমের সুস্পষ্ট লংঘন করা হয়; সে ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা এ ফিতনা সৃষ্টিকারীদের প্রতি প্রতিশোধ গ্রহণে জিহাদের হুকুম দিয়েছেন।
আয়াতে আরো বলা হয়েছে, তারা যদি এ ফিতনা থেকে বিরত হয় তবে শুধুমাত্র অত্যাচারী ব্যতীত অন্যদের সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই। আর এখানে বিরত থাকার অর্থ হলো- অবিশ্বাসীদের ও মুশরিকদের নিজেদের কুফরি ও শিরকি কাজ থেকে বিরত থাকা নয় বরং ফিতনা সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকা। যে ফিতনা মানুষকে আল্লাহ হুকুম অমান্য করতে বাধ্য করে।
পৃথিবীতে প্রত্যেক অবিশ্বাসী, মুশরিক, নাস্তিক সবারেই নিজেদের ইচ্ছামতো আকিদা-বিশ্বাস পোষণ করার অধিকার রয়েছে। তারা যার ইচ্ছা তাঁর ইবাদাত-উপাসনা করতে পারে; আবার চাইলে কারোর ইবাদাত নাও করতে পারে।
এক্ষেত্রে কুরআনের বিধান হলো- তাদেরকে গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা থেকে সত্যের আলোতে নিয়ে আসার জন্য উপদেশ দিতে হবে; সত্যের পথে আহ্বান করতে হবে। কিন্তু এ জন্য তাদের সঙ্গে জিহাদ বা যুদ্ধ করা যাবে না।
পক্ষান্তরে আল্লাহর জমিনে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বান্দায় পরিণত করতে জোর করার অধিকার কারো নেই। এ আয়াতে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার বিষয়ে ফিতনা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে কঠোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জিহাদের হুকুম বিধান প্রবর্তিত হয়েছে।
পড়ুন- সুরা বাকারার ১৯২ নং আয়াত
পরিষেশে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আয়াতের বিধান বাস্তবায়নে সতর্কতা ও হিকমতের সঙ্গে অবস্থান ন্যায়ভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। মানুষকে ইসলাম, দেশ ও সমাজের সর্বস্তরে শান্তি প্রতিষ্ঠার তাওফিক দান করুন। দেশের দায়িত্বশীলদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে শান্তি বিনষ্টকারীদের সব ফিতনা ও ষড়যন্ত্র অবসানের তাওফিক দান করুন। আমিন।