ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়াতে ‘লিপ ফিলার’ করা কতটা স্বাস্থ্যকর?
বলিউড থেকে হলিউড সব জায়গাতেই এখন ট্রেন্ডিংয়ে লিপ ফিলার। এমন অনেক অভিনেত্রী আছেন, যাদের হয়তো আপনি কয়েক বছর আগেও দেখেছেন একরকম চেহারার, আর বর্তমানে তারা অন্যরকম।
মূলত এসব অভিনেত্রীরা বিশেষ ত্বকের চিকিৎসার মাধ্যমে মুখের কিছু পরিবর্তন করেছেনে। আর এ কারণেই তাদের চেহারায় এসেছে পরিবর্তন। এতে করে হয়তো তারা আগের থেকেও বেশি সুন্দরী বনে গেছেন। একে কখনো কখনো সংশোধনমূলক সার্জারিও বলা হয়।
তবে সাধারণত মানুষ এই সার্জারিকে প্লাস্টিক সার্জারি বলেও অনেক সময় প্রচুর ট্রোল করে। বর্তমানে আরও একটি সৌন্দর্য বা ত্বকের চিকিৎসা আছে যা বেশ ট্রেন্ডিং। এটি হলো লিপ ফিলার। আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে অনেক অভিনেত্রীর ঠোঁট অতিরিক্ত মোটা, ফোলা বা ফুলে গিয়েছে। এটি ঠোঁট ফিলারের বিস্ময়।
লিপ ফিলার আসলে কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, লিপ ফিলার হলো এক ধরণের প্রসাধনী চিকিৎসা। যাদের ঠোঁত পাতলা, তারাই সাধারণত এই পদ্ধতি গ্রহণ করে ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়ান। এই ফিলারগুলো প্রাথমিকভাবে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড দিয়ে তৈরি, যা একটি প্রাকৃতিক পদার্থ।
ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়াতে ‘লিপ ফিলার’ করা কতটা স্বাস্থ্যকর?
এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ছাড়া আরও কিছু ফিলার আছে, যেগুলো কোলাজেন বা ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সিলাপেটাইট থেকে তৈরি।
লিপ ফিলারের পদ্ধতি কী?
সাধারণত লিপ ফিলারের দাম ২০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যেই এই ফিলার ট্রিটমেন্ট গ্রহণ করা সম্ভব। তাই হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই।
এক্ষেত্রে প্রথমেই একজন পেশাদার চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা প্লাস্টিক সার্জনের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। যাতে তিনি আপনার চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তাগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারেন।
লিপ ফিলারের সময় ঠোঁটে একটি স্থানীয় অ্যানেস্থেটিক ক্রিম প্রয়োগ করা হয়। যাতে প্রক্রিয়া চলাকালীন কোনো ব্যথা না লাগে। এরপর খুব পাতলা সুই দিয়ে ফিলারটি ঠোঁটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়াতে ‘লিপ ফিলার’ করা কতটা স্বাস্থ্যকর?
প্রক্রিয়াটি খুব সংবেদনশীল, তবে সাধারণত এটি ব্যথার কারণ হয় না। ঠোঁট ফিলার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আপনার ঠোঁট সামান্য ফোলা ও লাল দেখাতে পারে। এই লক্ষণগুলো সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যেই সমাধান হয়ে যায়।
লিপ ফিলারের উপকারিতা কী?
ঠোঁটের আকার বাড়ায়- পদ্ধতিটি ঠোঁটকে আরও পূর্ণ ও আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করে।
ফলাফল দ্রুত দৃশ্যমান- লিপ ফিলার প্রক্রিয়ার পরে ফলাফল অবিলম্বে দৃশ্যমান হয়। পদ্ধতির পরে আপনি দ্রুত স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপে ফিরে আসতে পারেন।
প্রাকৃতিক চেহারা- হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ফিলার সাধারণত একটি খুব প্রাকৃতিক চেহারা প্রদান করে। এটি ঠোঁটকে সুন্দর ও প্রাকৃতিক করে তোলে।
কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া- সঠিকভাবে করা হলে এই পদ্ধতিটি সাধারণত কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সাথে থাকে।
লিপ ফিলারের ক্ষতিকর দিক কী?
ফোলাভাব ও লালভাব- এই প্রক্রিয়াটির কয়েকদিন পরে সামান্য ফোলাভাব ও লালভাব হতে পারে।
ব্যথা ও অস্বস্তি- কিছু মানুষ যেখানে ফিলার স্থাপন করা হয়েছিল সেখানে হালকা ব্যথা ও অস্বস্তি অনুভব করতে পারে।
ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়াতে ‘লিপ ফিলার’ করা কতটা স্বাস্থ্যকর?
অমসৃণতা ও পিণ্ড- কখনো কখনো ফিলার অসমভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে ও ছোট পিণ্ড তৈরি করতে পারে।
অ্যালার্জি- অত্যন্ত বিরল ক্ষেত্রে কিছু লোকের অ্যালার্জি হতে পারে, যা ত্বকে ফুসকুড়ি বা চুলকানি হিসেবে প্রকাশ হতে পারে।
লিপ ফিলার করার পর যেসব সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি
>> ঠোঁট ফিলার করার পরে, বারবার ঠোঁট স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন। না হলে ফিলারটি সঠিকভাবে সেট হবে না।
>> আপনার চিকিৎসকের দেওয়া নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।
>> যদি কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা যায়, অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
>> গরম পদার্থের ব্যবহারও এড়িয়ে চলতে হবে।
>> ফোলা ও ব্যথা কমাতে প্রথম ২৪ ঘণ্টা গরম খাবার ও পানীয় পান এড়িয়ে চলুন।
>> ফলো-আপ অ্যাপয়েন্টমেন্টও জরুরি। চিকিৎসক যদি ফলো-আপ অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় নির্ধারণ করে দেন, তাহলে সময়মতো সম্পূর্ণ করুন।
সূত্র: বোল্ডস্কাই