আওয়ামী লীগ বলা যাবে না, বলতে হবে ‘নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি’: ফখরুল

0

১৯৭২ সালের মতো আবারও এদেশে আওয়ামী লীগ লুটপাট করছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার দেশে লুটপাটের রাজনীতি কায়েম করেছে। সাংবাদিক ভাইদের মনে থাকতে পারে- ১৯৭২ সালের পর আওয়ামী লীগ যখন এভাবে লুটপাট শুরু করে দিলো, তখন মাওলানা ভাসানি বলেছিলেন- আওয়ামী লীগকে এখন আর আওয়ামী লীগ বলা যাবে না, বলতে হবে ‘নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি’। যেদিকে যাবেন, যেখানে যাবেন, দেখবেন লুটপাট হচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আজ লুটপাট ছাড়া আর কিছু নেই।’

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম নগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে এই মন্তব্য করেন। মতবিনিময় অনুষ্ঠান কার্যত জনসভায় পরিণত হয়। চট্টগ্রাম নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন চত্বরে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ পত্রিকায় দেখলাম- একটি প্রকল্পে যেটি প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল দেড় হাজার কোটি টাকা, সেটি এখন হচ্ছে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর শুরুতে প্রস্তাবিত ব্যয় ছিল ৮ হাজার কোটি টাকা, সেটি এখন ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দেশে লুটপাট চলছে কারণ দেশে কোনও জবাবদিহিতা নেই।’

আগামীতে বিএনপি সব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে জানিয়েছে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি যে অতীতে দু-একটি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। এরপর থেকে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমরা আমাদের দলকে জনগণের সঙ্গে আরও বেশি করে সম্পৃক্ত করতে চাই। আমরা মনে করি, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেই এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে হবে। নির্বাচনে অংশ নেওয়াকে আমরা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক আন্দোলন বলে মনে করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। বিছানা থেকে তিনি উঠতে পারেন না, দাঁড়াতেও পারেন না। ডায়াবেটিস বেড়ে গিয়েছে। তাকে সরকার পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারা দেশে ৩৫ লাখ বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। যখন যেভাবে পারছে হত্যা করছে, গুম করছে জুডিসিয়াল কিলিং করছে। এরপরও বিএনপি গণতন্ত্রের অধিকার আদায় থেকে দূরে থেকে যায়নি। পুরো দেশের জনগণ বিএনপির সাপোর্টার। বিএনপি ইজ দ্যা পার্টি অব পিউপল। যখনই বিএনপিকে ধ্বংস করতে চেয়েছে বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো  জেগে উঠেছে।’

নেতা-কর্মীদের অভয় দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যারা বিএনপি করি বা অঙ্গসংগঠন করি, আমাদের কখনো হতাশ হলে চলবে না। আপনাদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে, প্রতিনিয়ত নির্যাতন হচ্ছে, প্রচণ্ড নির্যাতন হচ্ছে, খুন করছে, গুম করছে, তারপরও আপনারা মাথা নোয়াননি। হার স্বীকার করেননি। সে জন্য বলছি, হতাশা কখনো আপনাদের আসল জায়গায় পৌঁছে দেয়নি। বিএনপির দিকে মানুষ আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। বিএনপি আন্দোলন শুরু করবে, সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করবে এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে।’

তিনি বলেন, ‘আজ স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হয়ে গেছে, ৪৯ বছর চলছে। আজও গণতন্ত্রের জন্য আমাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে। জীবন দিতে হচ্ছে। এর জন্য দায়ী একটি মাত্র দল, সেটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু  কাজে তারা সম্পূর্ণভাবে একনায়কতন্ত্র, স্বৈরাচারতন্ত্র কায়েম করতে চায়। এটা তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এটা তাদের স্বভাবজত বৈশিষ্ট্য। আজ না, আওয়ামী লীগ জন্মের পর থেকে তারা কখনও ভিন্নমত গ্রহণ করতে চায়নি।’ 

নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com