৩ ইস্যুতে ভারতের সুপ্রিমকোর্টকে তুলাধোনা সাবেক প্রধান বিচারপতির

0

বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন, বাবরি মসজিদ রায় ও কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সুপ্রিমকোর্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দিল্লি হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি এপি শাহ।

তিনি বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক নেতারাই গণতন্ত্র ধ্বংস করেন। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকেই কাজে লাগানো হয়। ভারতেও সেই ধারা দেখা যাচ্ছে।’

এপি শাহ আরও বলেন, সিবিআই বা পুলিশকে বিরোধীদের হেনস্তা করার কাজে লাগানো হচ্ছে। বিদ্বেষমূলক মন্তব্য রুটিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীর্ষ আদালতের দায়িত্ব সংবিধানকে রক্ষা করা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো– সুপ্রিমকোর্টের প্রাথমিক পদক্ষেপ খুবই রক্ষণশীল। সুপ্রিমকোর্ট এমনভাবে আচরণ করছে, যাতে তাকে সরকারের থেকে আলাদা করা যাচ্ছে না।

সোমবার ‘স্বাধীনতার জন্য লড়াই: একবিংশ শতাব্দীতে সুপ্রিমকোর্ট’ শীর্ষক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

সুপ্রিমকোর্টের সাম্প্রতিক যাবতীয় রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলে এপি শাহ বলেন, সুপ্রিমকোর্টের পরিচালনাতেই আসামে এনআরসি হয়।

তার যুক্তি– ‘নাগরিকত্ব সব অধিকারের ওপরে। অনুপ্রবেশের তত্ত্ব ভুল। অনুপ্রবেশকারী বলে চিহ্নিত ১৯ লাখ মানুষের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠই হিন্দু। অনেকেই আদিবাসী। মাত্র ৬ লাখ মুসলিম।’

শাহ বলেন, ‘আসামে আদালতই এনআরসি করিয়েছে। এখন আদালতে গিয়ে লাভ নেই। সে দরজা বন্ধ।’

ডিটেনশন শিবির নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘বিচারপতি গগৈ প্রশ্ন করেছিলেন– ডিটেনশন শিবিরে কতজন রয়েছে? ৯০০ জন শুনে চটে গিয়ে বলেছিলেন– মাত্র ৯০০? মৌলিক অধিকারের জন্য আদালতের থেকে এ কথা শোনার পরও বিশ্বাস করা যায়, এই আদালত অধিকারের জন্য?’

প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের আমলে সরকারের সুপ্রিমকোর্টকে মুখবন্ধ খামে তথ্য দেয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। নির্বাচনী বন্ড নিয়েও সুপ্রিমকোর্টের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

বাবরি মসজিদ রায় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শাহ। প্রধান বিচারপতি হিসেবে গগৈয়ের বেঞ্চের এই রায় কে লিখেছেন, তা রায়ে বলা হয়নি। তা নিয়ে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘রায়টা ইউনানিম্যাস ছিল, কিন্তু অ্যাননিমাস ছিল। আদালত কার্যত দোষীকেই পুরস্কৃত করেছে। মসজিদ ভাঙা দোষ হলে জমি কী করে হিন্দুদের কাছে যায়?’

মুসলিমদের বাবরি মসজিদ থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ৫ একর জমি দেয়াও ‘অপমানজনক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর মানুষের স্বাভাবিক জীবনে বাধানিষেধ, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার বিষয়েও সুপ্রিমকোর্টের রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com