জেএফ-১৭বি জঙ্গিবিমানে সমৃদ্ধ হচ্ছে পাকিস্তান

0

দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট ২৬টি জেএফ-১৭বি থান্ডার মাল্টিরোল জঙ্গিবিমানের চাহিদার বিপরীতে প্রথম ১২টি বিমান পাকিস্তান বিমান বাহিনী অদূর ভবিষ্যতে পাবে বলে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা জেন্সকে জানিয়েছেন।
এসব বিমানের আটটি তৈরী হচ্ছে কামরায় পাকিস্তান অ্যারোনটিক্যাল কমপ্লেক্সে। বাকিগুলো তৈরী করছে চীনের চেঙদু এয়ারক্র্যাফট ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপ। চীনে অবশ্য এসব বিমান এফসি-১ জিয়ালং নামে পরিচিত।
এসব বিমানের কয়েকটিতে অ্যারিয়াল রিফুয়েলিং ব্যবস্থা রয়েছে। গত ডিসেম্বরে পিএসি কামরায় সরবরাহের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর চিফ অব এয়ার স্টাফ এয়ার মার্শাল মুজাহিদ আনোয়ার খান, উপস্থিত ছিলেন। বাকি জেএফ-১৭ বি বিমানবগুলো ২০২১ সাল নাগাদ তৈরী হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত ২০ জানুয়ারি জেন্সের সাথে আলাপকালে এ সি এম খান ব্যাখ্যা করে বলেন যে জেএফ-১৭বি থান্ডারের জন্য পাকিস্তান বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, জেএফ-১৭ পাইলটেরা বর্তমানে লকহিড মার্টিন এফ-১৬, চেঙদু এফ-৭পিজি বা ড্যাসল্ট মিরেজ ৩ইএ রোজ বিমানে মোতায়েন আছে। তাদেরকে জেএফ-১৭-এ মোতায়েন করা হবে।
তিনি বলেন, এসব পাইলট সরাসরি জেএফ-১৭ ওসিইউতে যাবে অ্যাডভান্সড প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করে।
এ সি এম খান আরো বলেন, এর ফলে চীন-পাকিস্তানি জেটগুলোর পাইলটেরা বর্তমান পাইলটদের চেয়ে অনেক কম বয়সী হবেন।

জেএফ-১৭বি প্রোটোটাইপ ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রথম উড্ডয়ন করে চীনে।

জেএফ-১৭ হলো পাকিস্তান বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নের অনেক প্রকল্পের ধারাবাহিকতার ফল। চেঙ্গদু এয়ারক্রাফট করপোরেশনের (সিএসি) জে-৭ জঙ্গিবিমান থেকে ধাপে ধাপে এই আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সোভিয়েতবিরোধী আফগান মুজাহিদদের প্রতি মার্কিন সহায়তার অন্যতম মধ্যস্ততাকারী ছিল পাকিস্তান। ফলে আরেকটি প্রতিরক্ষা খাতে পাকিস্তানকে তখন সহায়তা করতে আগ্রহী ছিল যুক্তরাষ্ট্র। সোভিয়েত ইউনিয়ন তখন পরবর্তী প্রজন্মের লাইটওয়েট ফাইটার হিসেবে মিগ-২৯ নামানোর প্রস্তুতি নিতে থাকায় পাকিস্তানের একে প্রতিরোধ করার জন্য নতুন বিমান চেয়েছিল।

এর ফলেই প্রজেক্ট সাব্রে ২-এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। এটি ছিল সিএসি ও গ্রুম্যানের জে-৭এসকে আধুনিকায়নের একটি প্রয়াস। সাব্রে ২ আসলে ছিল জে-৭-এর কাঠামোর সম্প্রসারণ। তবে এর বহিরাবরণে পরিবর্তন আনা হয়। এয়ার ইনটেকের স্থান ও আকারেও পরিবর্তন আনা হয়। তবে সমসাময়িক আমেরিকান জঙ্গি বিমান বা মিগ-২৯-এর সম্ভাব্য দক্ষতার কাছাকাছিও ছিল না সাব্রে ২-এর দক্ষতা। ফলে এটি আর তেমন অগ্রসর হতে পারেনি।

তবে জেএফ-১৭-এর সবচেয়ে বড় অগ্রগতি হলো এর ব্যয়ে। সমসাময়িক অন্য যেকোনো বিমানের চেয়ে জেএফ-১৭ অনেক সস্তা, এমনটি পুরনো বিমানের চেয়েও এর দাম কম। আবার ব্লক২ জেএফ-১৭এসের দাম প্রায় একই রয়ে গেছে। মিয়ানমার প্রতিটি মাত্র ১৬ মিলিয়ন করে কিনেছে। এটা হলো জেএফ-১৭এসের একটি রফতানি সাফল্য। একটি গরিব দেশ খুবই কম দামে তুলনামূলক আধুনিক জঙ্গিবিমান নামাতে পেরেছে। তবে যুদ্ধে এটি কতটা সাফল্য প্রদর্শন করতে পারে, সেটিই দেখার বিষয়। অবশ্য ট্রায়ালে জেএফ-১৭-এর দক্ষতায় পাকিস্তান দৃশ্যত সন্তুষ্ট। অনেক দিক থেকেই চীন আধুনিক যুগে প্রবেশ করার জন্য শেষ প্রজন্মের তথা মিগ-২১-এর বাজেট ফাইটার আধুনিকায়ন করেছে এফ-১৬ থেকে সহায়তা ও বাড়তি নক্সা কু নিয়ে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com