কোথাও কোথাও কমতে শুরু করলেও বেশিরভাগ এলাকায় বাড়ছে পানি

0

ভারতীয় পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে ডুবছে দেশের বেশ কয়েকটি জেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। কোথাও কোথাও পানি কমতে শুরু করলেও বেশিরভাগ এলাকায় বাড়ছে।

কুমিল্লা

জেলার বুড়িচং উপজেলায় বন্যার পানি বেড়েই চলছে। সময় যত গড়াচ্ছে পরিস্থিতি ততই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। পানি বন্দিদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কাজ করছেন। দুর্গতদের উদ্ধারে ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রাক। ট্রাকে করে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে।

ফেনী

জেলার পরশুরামে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সেনাবাহিনীসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার কাজ সচল রেখেছেন। উপজেলার অলকা, নোয়াপুর, ধনিকুন্ডা ও সাতকুচিয়া এলাকায় কোথায় হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানি। শুভার বাজার এলাকা থেকে পানি সরে গেছে।

রাজশাহী

পানি কমতে থাকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এসময় পানি বেড়েছে ৪ সেন্টিমিটার। তবে এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

লালমনিরহাট

ভারতের সিকিমে পাহাড়ধসের কারণে তিস্তা নদীর ওপরে নির্মিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা বাঁধে পানির চাপ বাড়লেও তিস্তায় বন্যার শঙ্কা নেই। তিস্তা পাড়ের মানুষদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি অন্তত ১৪ হাজার ৩৪০টি পরিবার। এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে নদ-নদীর পানি। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছে জেলা প্রশাসন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের বেশ কয়েকটিতে উঠেছেন বন্যাকবলিত পরিবারগুলো।

মৌলভীবাজার

ভারতে বৃষ্টি না হওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবাহ কমেছে। এতে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কমতে শুরু করেছে মনু নদীর পানি প্রবাহ। বন্যায় ডুবে গেছে জেলার কুলাউড়া, জুড়ী, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বহু ঘরবাড়ি, তলিয়ে যায় আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রামীণ সড়ক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে কমপক্ষে আড়াই লাখের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

জেলার আখাউড়ায় হাওড়া নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমেছে। ফলে আখাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। এ নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমেছে। এখন পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। উজানে বৃষ্টিপাত কমতে থাকায় পানি কমে আসছে। কেন্দ্রীয় তথ্য অনুযায়ী আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি আরও কমবে। ভারতে বিপৎসীমার নিচে পানি নেমে আসায় আমাদের জন্যে সুখবর।

লক্ষ্মীপুর

ভারী বর্ষণের পর সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। রামগতি, কমলনগর, রায়পুর, রামগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর সদরের একাংশে অন্তত ৬ লাখ মানুষ পানির কষ্টে রয়েছেন। অনেকের বসতঘর পানিতে ডুবে আছে। কমলনগরের চরকাদিরা ইউনিয়নের সর্বত্র এখন ৪ ফুট পানির নিচে।

মোংলা

বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সব নদ-নদীর পানি। ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হচ্ছে উপকূল। এরমধ্যে সুন্দরবন দুই ফুট উচ্চার পানিতে তলিয়ে গেছে। বনের ভেতরে নিম্নাঞ্চলে পানির চাপ আরও বেশি। গোটা সুন্দরবনই স্থান বিশেষ ২-৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত। তবে বন্যপ্রাণীর কোনো ক্ষয়ক্ষতি এখনো চোখে পড়েনি।

সিলেট

জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বিভিন্ন পয়েন্টে কমেছে। তবে কুশিয়ারা নদীর পানি তিন পয়েন্টে এখনও বিপৎসীমার উপরে রয়েছে। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মিরসরাই

উপজেলায় পানিবন্দি লাখো মানুষ। উপজেলার ধুম ইউনিয়নের আনন্দবাজার, শুক্রবার ইয়ারহাট, মোবারকঘোনা, মিনাবাজার, আনন্দ বাজার এলাকায় শত শত লোক এখনো আটকে রয়েছেন। এছাড়াও নাহেরপুর এলাকায় শত শত ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। নেই বিদ্যুৎ-মোবাইল নেটওয়ার্ক।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com