দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে: ফরহাদ মজহার

0

কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার ফরহাদ মজহার বলেছেন, জনগণের প্রধান একটি নাগরিক অধিকার হলো ভোটের অধিকার। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এর মাধ্যমে সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করে রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্ষমতায় এনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বুধবার (২১ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রতিবাদী নাগরিক সমাজ আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

ফরহাদ মাজহার বলেন, এ অভ্যুত্থানে সবার অবদান আছে। গত ১৭ বছর আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয়নি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা তার রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখতে নিজের মতো করে সংবিধান করেছে, তা বাতিল করতে হবে।

তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের নিয়ে ভারত যে খেলা খেলতে চেয়েছে, তা অনেক কষ্টে রুখে দেওয়া হয়েছে। এখন শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের আওতায় আনতে হবে। বন্দি বিনিময় চুক্তি তিনি করেছেন, তার আওতায় তিনিই পড়বেন।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী। তিনি ‘ফ্যাসিবাদের পতন: অন্তবর্তীকালীন সরকারের করণীয়’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ও অন্তবর্তীকালীন সরকারকে দায়িত্ব নির্ধারণের আহ্বান জানিয়ে ৮ দফা দেন।

দাবিগুলো হলো :

১. আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় জীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।

২. জুলাই-আগস্টে সংগঠিত সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।

৩. সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া হত্যা, লুটপাটসহ সব ধরনের অপরাধের তদন্ত ও বিচার করতে হবে। বিচারহীনতার ও জবাবদিহিতার অনুপস্থিতি জাতিকে সর্বদিক থেকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়ে একে সম্পূর্ণরূপে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে। সুতরাং, সরকারকে এ বিষয়ে গভীর মনোযোগ দিতে হবে।

৪. হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।

৫. বিদ্যমান প্রশাসন কাঠামোতে কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ব্যতীত এ মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত করা বা পুরস্কৃত করা- উভয় বিষয়েই বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে।

৬. যে কোনো প্রকার বা যে কোনো ক্ষেত্রেই হোক দুর্নীতির মূল উৎপাটন করতে হবে। বিগত ১৬ বছরের সীমাহীন দুর্নীতিই আজ বাংলাদেশকে নিঃস্ব রিক্ত করছে।

৭. গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়াকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। গণতন্ত্রহীনতার অবাধ ও উলঙ্গ চর্চার প্রতিফলন ঘটেছে সমাজ ও রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের সুস্থ বিকাশ না ঘটলে এই গণবিপ্লবের সাফল্য অর্জিত হবে না।

৮. শিক্ষাব্যবস্থা বলতে বাংলাদেশে আজ কোনো কিছুর অস্তিত্ব আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। বিগত ফ্যাসিস্টরা শিক্ষা নামক বিষয়টাকে হত্যা করেছে। সুতরাং, এ প্রেক্ষাপটে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি একটি সর্বজনীন গণমুখী শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com