কোটা আন্দোলনে সংবাদ সংগ্রহ: সাংবাদিকদের ওপর হামলায় গভীর উদ্বেগ বিএফইউজে ও ডিইউজের
কোটা সংস্কার আন্দোলনে মাঠ পর্যায়ে সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা, রক্তাক্ত জখমের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
বুধবার বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী এবং ডিইউজে সভাপতি মো: শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম এক যুক্ত বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে প্রায় অর্ধ শতাধিক সাংবাদিক নির্মম হামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে বলা হয়, সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন কর্মসূচির খবর সংগ্রহ এবং তা জনগণের সামনে উপস্থাপন করেন। এ দায়িত্ব পালনে তাদের ওপর আক্রমণ বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া খুবই উদ্বেগের।
বিবৃতিতে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সহযোগিতার পুনঃআহবান জানিয়ে বলা হয়, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পুলিশ, ছাত্রলীগ ও আন্দোলনরত ছাত্রদের হাতে শাহবাগসহ বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকরা হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। শাহবাগে সংবাদ সংগ্রহকালে সময় টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ত্বোহা খান তামিম ও রাশেদ বাপ্পী, সিনিয়র ভিডিও জার্নালিস্ট সামছুল আরেফিন প্রিন্স, সিনিয়র ভিডিও জার্নালিস্ট সুমন সরকার, সিনিয়র ভিডিও জার্নালিস্ট সালাউদ্দিন আল মামুন আহত হন। সোম ও মঙ্গলবার সময় সংবাদের চিত্র সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন, সময় সংবাদের রংপুরের রিপোর্টার রেদওয়ান হিমেল ও চিত্র সাংবাদিক তারিকুল ইসলাম এবং বগুড়ার রিপোর্টার আব্দুল আউয়াল, সময় টিভি অনলাইনের দুই প্রতিবেদক মহির মারুফ এবং আবু সাঈদ নিশানও হামলার শিকার হন।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় একুশে টিভির জুবায়ের আহমেদ, বণিক বার্তার মেহেদি মামুন, দৈনিক বাংলার আব্দুর রহমান সার্জিল জনকণ্ঠের ওয়াজহাতুল ওয়াস্তি, বাংলা ট্রিবিউনের এস এম তাওহীদ, সময়ের আলোর মুকফিকুর রিজওয়ান, দ্য সাউথ এশিয়ান নিউজের সাকিব আহমেদ, যুগান্তরের মোসাদ্দেকুর রহমান, তেজগাঁও থানা এলাকায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের স্টাফ রিপোর্ট আরমান ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আহত হন জনকন্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য মোতাহার হোসেন, জনকণ্ঠ পত্রিকার চিত্র সাংবাদিক সুমন্ত চক্রবর্তী।
বিবৃতিতে সাগর-রুনি হত্যাসহ বর্তমান সরকারের আমলে ৬১ জন সাংবাদিক হত্যার ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়, গত বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই সাংবাদিকরা যখন তথ্য-উপাত্তসহ সত্য প্রকাশে কলম ধরেছেন তখনই তাদের রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত মাঠ পর্যায়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সংবাদিকরা পুলিশ ও সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনেও তারা পুলিশ ও ছাত্রলীগের গুণ্ডাবাহিনীর টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন।
অবিলম্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা নির্যাতন বন্ধ না হলে বিএফইউজে ও ডিইউজে বৃহত্তর কর্মসূচি বাধ্য হবে বলে উল্লেখ করেন নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ সমাবেশ
কোটা সংস্কার আন্দোলনে মাঠ পর্যায়ে সংবাদ সংগ্রহ করাবস্থায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা নির্যাতনের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজ) আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে আপনার উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী ও ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি