হরিজন সম্প্রদায়ের চার দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ
রাজধানীর বংশাল থানাধীন ৩৩নং ওয়ার্ডের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিবাসীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত সব সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করার পাশাপাশি হরিজনদের বিরুদ্ধে ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিল আউয়াল হোসেনের দায়ের করা সব মিথ্যা ও হয়রানির মামলা তুলে নেওয়াসহ চার দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হরিজন সম্প্রদায়।
শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানিয়েছেন হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজনেরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন বলেন, মিরনজিল্লার ইতিহাস প্রায় ৪০০ বছরের অধিক পুরোনো। যে মানুষগুলোর অমানবিক পরিশ্রমে ফলে এ নগর তৈরি হয়ে আজকের তিলোত্তমা ঢাকায় পরিণত। তারাই আজ এ নগরে বহিরাগত-অস্থায়ী বাসিন্দার তকমা পাচ্ছে। তাদের এ দুর্যোগের সময় জনস্বার্থে উচ্চ আদালতে মামলা করে পাশে দাঁড়ান কিছু সুহৃদ আইনজীবী। যার ফলে উচ্চ আদালত প্রথম দফায় গত ১০ জুন এ উচ্ছেদ কার্যক্রমকে ১ মাসের স্থিতি আদেশ প্রদান করেন।
তারা আরও বলেন, এ ১ মাসের স্থিতি আদেশ পূর্ণ না হতেই গত ৯ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ আবার উচ্ছেদ, অভিযানের নোটিশ দেয়। আর ১০ জুলাই করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান উচ্ছেদ পরিচালনার লক্ষে স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে দুইশতাধিক (২০০) ক্যাডার বাহিনী নিয়ে কলোনিতে ঢুকে এক চরম আতঙ্ক ছড়ায়। কলোনির মানুষদের কিছু বুঝে উঠার আগেই কাউন্সিলরের ক্যাডার বাহিনী কলোনির মানুষদের ওপর দেশীয় অস্ত্র- ইট-লোহার রড- চাপাতি ইত্যাদি দিয়ে হামলা চালায়। এরই পূর্বে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এক টিভি সাক্ষাতে বলেন, কলোনিতে মাদক ব্যবসা চলে, এরা আমার কর্মচারীদের জিম্মি করে রাখছে এরা বহিরাগত ইত্যাদি। তার সঙ্গে কলোনির ছাত্র-যুবককে সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাং আখ্যায়িত করে অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করে। এ সন্ত্রাসী হামলার ও মেয়রের ষড়যন্ত্র এবং বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে মিরনজিল্লা ছাত্র-যুব ঐক্য আজ রাজপথে নেমেছে।
এ সময় তারা চারটি দাবি জানিয়েছেন, সেগুলো হলো-
১. হামলার সঙ্গে জড়িত সব সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। হরিজনদের বিরুদ্ধে ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিল আউয়াল হোসেনের দায়ের করা সব মিথ্যা ও হয়রানির মামলা তুলে নিতে হবে।
২. ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের এ ষড়যন্ত্র এবং বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
৩. ৪০০ বছরের পুরোনো বসতি কোনোক্রমেই অবৈধ নয়, তাই সব ধরনের উচ্ছেদ পরিকল্পনা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।
৪. মিরনাজল্লার ভূমি মিরনজিল্লা বাসিদেরই। এ জমির মালিকানা মিরনজিল্লার বাসিন্দাদের নামে’ দলিল সব তুলে দিতে হবে।