সুস্থ থাকতে বর্ষার মৌসুমে কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন?
বর্ষায় বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তার মধ্যে পেট খারাপের সমস্যাও দেখা দেয় ছোট-বড় অনেকের মধ্যেই। বিশেষ করে বদহজম, পেট খারাপ, ক্ষুধামন্দা, বমি ভাব এসব লক্ষণ দেখলে এখন মোটেও অবহেলা করবেন না।
আসলে ঋতুবদলের এই সময় বিভিন্ন রকম ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে। খাবার, পানি থেকে সংক্রামক রোগও ছড়ায়। তাই এ সময় খাওয়া-দাওয়ার দিকে একটু নজর দেওয়া জরুরি।
সামুদ্রিক খাবার
বর্ষায় কিছু মাছ ও চিংড়ির মতো সামুদ্রিক খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এর দুটি প্রধান কারণ হলো- বর্ষাকালে পানিতে রোগজীবাণু ও ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মাছকে সংক্রামিত করতে পারে। এছাড়া এই প্রজনন ঋতুতে সামুদ্রিক খাবারে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে, যা খেলে পেটের ক্ষতি হতে পারে।
মসলাদার ও ভাজাপোড়া খাবার
এ সময় অতিরিক্ত তৈলাক্ত-মসলাদার ও ভাজাপোড়া খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে। তার চেয়ে বরং ঘরের কম মসলায় রান্না খাবার খান। বেশি মসলা দেওয়া খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়বে।
বর্ষার এই সময় সালমোনেলা, ক্লসট্রিডিয়াম, স্ট্যাফাইলোকক্কাস জাতীয় সংক্রামক ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে। খাবার বা পানি থেকে এসব ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে।
আর সে কারণেই পেটের সমস্যা দেখা দেয়। তাই এ সময় রাস্তা থেকে কেনা খাবার, কাটা ফল, শরবত ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন। এমনকি এ সময় মিষ্টিজাতীয় খাবারও যতটা সম্ভব কম খাওয়াই ভালো।
চা-কফি
পেট খারাপ হলে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওআরএস খান। এ সময় শরীর পানিশূন্য হয়ে গেলে বিপদ ঘটতে পারে। অনেকেরই ঘন ঘন চা-কফি পানের অভ্যাস আছে।
তবে জানলে অবাক হবেন, ক্যাফেইন শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি করে। তাই ঘন ঘন চা বা কফিতে চুমুক দেবেন না। ক্যাফেইন পেটে গেলে সমস্যা আরও বাড়বে।
আইসক্রিম
ডায়রিয়া হলে আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন। আসলে আইসক্রিম বেশি খেলে হজম তো হবেই না, উল্টে সমস্যা আরও বাড়বে।
দুধ
দুধ একটি সুষম খাবার। দুধ খেলে শরীরে ভিটামিন, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, খনিজের ঘাটতি মেটে। তবে পেট খারাপের সময়ে দুধ ও দুধের তৈরি খাবার না খাওয়ারই পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।
কারণ দুধের ল্যাকটোজ সহজে হজম হতে চায় না। পেট খারাপের সময় দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
কোমল পানীয়
এমনিতেও কোমল পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য ততটা উপকারী নয়। তাই পেট খারাপ হলে ভুলেও কোমল পানীয় পান করবেন না। এতে সমস্যা আরও বাড়বে।
মাশরুম
মাশরুম মূলত স্যাঁতসেঁতে মাটিতে জন্মায়। ফলে এতে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। যদিও মাশরুম রান্নায় ব্যবহারের আগে ভালো করে প্রক্রিয়াজাত করে নেওয়া হয়, তবুও সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাই বর্ষায় মাশরুম না খাওয়াই ভালো।
লবণাক্ত খাবার
অতিরিক্ত লবণ শরীরে পানি ধরে রাখতে পারে। ফলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন- অলসতা, ক্ষুধার্ততা, ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
টকদই
শীতল প্রকৃতির খাবারের কারণে বর্ষা মৌসুমে টকদই খাওয়া শরীরের জন্য ভালো হতে পারে। যদি আপনি সাইনোসাইটিসে ভোগেন, তাহলে এই দুগ্ধজাত পণ্য এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
সূত্র: হেলথশটস