ইরানে রাইসির মৃত্যুর পর তার উত্তরসূরি বাছাইয়ে প্রেসিডেন্ট হতে লড়ছেন যারা

0

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর তার উত্তরসূরি বাছাইয়ে আজ শুক্রবার আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার এই পদে প্রার্থী হয়েছেন ছয়জন। প্রার্থীদের মধ্যে পাঁচজনই রক্ষণশীল, একজন সংস্কারপন্থি। তবে শেষ মুহূর্তে গতকাল বুধবার ছয় প্রার্থীর মধ্যে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

ইরানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদমর্যাদার অফিসের প্রধান প্রতিযোগী হলেন— রক্ষণশীল পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাগের গালিবাফ, অতিরক্ষণশীল প্রাক্তন পারমাণবিক আলোচক সাইদ জালিলি এবং একমাত্র সংস্কারবাদী মাসুদ পেজেশকিয়ান। অন্যরা হলেন রক্ষণশীল তেহরানের মেয়র আলিরেজা জাকানি, ধর্মগুরু মোস্তফা পুরমোহাম্মাদি। এর মধ্যে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট গাজিজাদেহ হাশেমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ : মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ (৬২) ইরানের একজন পরিচিত রক্ষণশীল নেতা। ২০২০ সাল থেকে দেশটির পার্লামেন্টে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ইরানের উত্তর-পূর্বের নগরী মাশহাদের কাছে ১৯৬১ সালের ২৩ সপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন গালিবাফ। রাজধানী তেহরানের মেয়রের দায়িত্ব পালনসহ তিনি সরকারি নানা পদে ছিলেন। রাইসির উত্তরসূরি হিসেবে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে তার নাম।

আমির-হোসেইন গাজিজাদেহ হাশেমি : আমির-হোসেইন গাজিজাদেহ হাশেমি (৫৩) চরম রক্ষণশীল একজন নেতা। চিকিৎসক গাজিজাদেহ হাশেমি রাইসি সরকারের একজন কট্টর সমর্থক। ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন গাজিজাদেহ হাশেমি। ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মার্টায়ার্স ফাউন্ডেশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে মাশহাদ আসন থেকে টানা চারবার পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন।

সাঈদ জালিলি : একজন কট্টর রক্ষণশীল প্রার্থী সাঈদ জালিলি (৫৮)। তেহরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইরানের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেন তিনি। জালিলি ঘোর পশ্চিমাবিরোধী। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তিরও তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাশহাদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন জালিলি। খামেনি তাকে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিলেন।

মাসুদ পেজেশকিয়ান : এবারের প্রার্থীদের মধ্যে পেজেশকিয়ানই সবচেয়ে বয়স্ক এবং একমাত্র সংস্কারপন্থি প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান। ১৯৫৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া পেজেশকিয়ান একজন হার্ট সার্জন। ২০০৮ সাল থেকে টানা উত্তর-পশ্চিমের নগরী তাবরিজ থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন তিনি। পেজেশকিয়ান বরাবর ইরানের বর্তমান শাসকদের সমালোচনা করে এসেছেন। ইরানের সাবেক সংস্কারপন্থি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামির সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

মোস্তফা পুরমোহাম্মদি : মোস্তফা পুরমোহাম্মদি (৬৪) এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা একমাত্র ধর্মীয় নেতা। রক্ষণশীল ও অভিজ্ঞ এই রাজনীতিক ১৯৫৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর কুমনগরে জন্মগ্রহণ করেন। পুরমোহাম্মদি দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও ছিলেন।

আলিরেজা জাকানি : আলিরেজা জাকানি (৫৮) কট্টর রক্ষণশীল রাজনীতিক। ২০২১ সালের আগস্ট থেকে তেহরানের মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ১৯৬৫ সালের ২ এপ্রিল রাজধানী তেহরানে জন্ম নেওয়া জাকানি ইরাক-ইরান যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। ২০২১ সালে তিনি রাইসির প্রতি সমর্থন জানিয়ে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। এর আগে ২০১৩ ও ২০১৭ সালে এই পদে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হয়েছিলেন তিনি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com