নারী, শিশু ও কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবায় সহায়তা দেবে ইউনিসেফ ও ইউএনএফপি
নারী, শিশু ও কিশোরীদের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা উন্নত করতে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে কানাডা ইউনিসেফ ও ইউএনএফপি। পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে ৬০ লাখ শিশু এবং প্রায় ২০ লাখ নারীর স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করা হবে। এ প্রকল্পের লক্ষ্য মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো এবং অনুন্নত অঞ্চলগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করা।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) ইউনিসেফ ও ইউএনএফপি’র যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প, বিশেষ করে পাঁচটি অনুন্নত গ্রামীণ এলাকায় কুড়িগ্রাম, ভোলা, খাগড়াছড়ি, শেরপুর ও সুনামগঞ্জ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার গুরুতর ঘাটতি পূরণ করবে এবং লিঙ্গ সমতা ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির বিষয়গুলোকে তুলে ধরার পাশাপাশি মা ও শিশুর মৃত্যুহার কমাবে।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, গত এক দশকে অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু হার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় উদ্বেগ হিসেবে রয়ে গেছে। এই হার ২০১০ সালের প্রতি ১ লাখ জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে ১৯৪ জনের মৃত্যু থেকে ২০২৩ সালে কমে ১৩৬ জন হয়েছে, অর্থাৎ প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। তবে শিশুমৃত্যুর এই হার ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি ১ লাখ জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে ৭০ জনে নামিয়ে আনার যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) রয়েছে, তা থেকে অনেক দূরে। এসব মৃত্যুর অনেকগুলোই হয় রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনির মতো প্রতিরোধযোগ্য কারণে।
কানাডীয় অর্থায়নে এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রজনন বয়সী ১৯ লাখের বেশি নারী, যাদের দুই-তৃতীয়াংশ কিশোরী এবং নবজাতক ও ৫ বছরের কম বয়সী শিশুসহ প্রায় ৬০ লাখ শিশু যেন তাদের অপরিহার্য স্বাস্থ্যসেবা পায় তা নিশ্চিত করা হবে।
কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস বলেন, কানাডা বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, বিশেষ করে নারী ও মেয়েদের উপকারের জন্য। আমরা আশা, করি এই প্রকল্প অন্য জেলাগুলোর জন্য একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, এ প্রকল্প শুধু শিশু ও নারীদের জীবনই বাঁচাবে না, একইসঙ্গে নিরাপদ একটি পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে আরও টেকসই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। শিশু ও নারী, বিশেষ করে কিশোরীরা সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে ও উন্নতি করতে পারবে।
ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের প্রতিনিধি ক্রিস্টিন ব্লকহাস বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা সম্মিলিতভাবে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে তার চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছাতে সহায়তা করবো। বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর হার কমানোর যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা অর্জন করা সম্ভব, তবে এর জন্য প্রতিটি গর্ভাবস্থাই যাতে কাঙ্ক্ষিত এবং প্রতিটি প্রসবই নিরাপদ হয় তা নিশ্চিত করতে আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
প্রকল্পের একটি তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি হবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং যৌন, প্রজনন, মাতৃ, নবজাতক, শিশু ও কিশোরী স্বাস্থ্যের উন্নত মান, আওতা বৃদ্ধি ও লিঙ্গ-সংবেদনশীলতা। এটি নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারী, কিশোরী ও শিশুদের অধিকার পূরণে সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের বিষয়গুলো তুলে ধরার মাধ্যমে প্রান্তিক ও অনুন্নত জনগোষ্ঠীর জন্য সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা বা পরিচর্যা নিশ্চিত করবে।