ডোনাল্ড ট্রাম্প আদালতে দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন বলে মনে করেন অধিকাংশ মার্কিনি
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আদালতে দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন বলে মনে করেন অধিকাংশ মার্কিনি। নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে ব্যবসার তথ্য গোপন ও এক পর্নো তারকার মুখ বন্ধ করতে অর্থ দেওয়ার মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মামলার শেষ সময়ের যুক্তিতর্ক চলছে। শিগগিরই রায় ঘোষণা হবে।
সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। জরিপের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫৬ শতাংশ মার্কিনি মনে করেন, ট্রাম্প নিশ্চিতভাবে অথবা সম্ভবত দোষী সাব্যস্ত হবেন। বিস্ময়কর তথ্য হলো– ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির অনেকেই মনে করছেন, আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করবেন। জরিপে দেখা গেছে, প্রায় সব ডেমোক্র্যাটই ট্রাম্পকে দোষী মনে করেন।
অন্যদিকে প্রতি ১০ রিপাবলিকানের আটজন ভিন্ন কথা বলছেন। তারা নিশ্চিত নন আসলে কেমন রায় হবে। প্রতি চারজন ডেমোক্র্যাটের মধ্যে তিনজন মনে করেন, নিশ্চিতভাবেই দোষী সাব্যস্ত হবেন ট্রাম্প। তবে অর্ধেক রিপাবলিকান বলছেন ট্রাম্প দোষী নন, তিনি নিশ্চিতভাবে দোষী সাব্যস্ত হবেন না।
যদি সাধারণ মার্কিনিরা মনে করেন ট্রাম্প দোষী, তাহলে বিচারক যে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করবেন– এমন মতই তারা প্রকাশ করবেন। যারা তাঁকে দোষী মনে করেন না, তাদের মত হবে ট্রাম্পের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিপক্ষে। তবে উভয় পক্ষের এক-তৃতীয়াংশ মনে করেন, বিচারকরা যা মনে করেন, তার ঠিক উল্টো রায়টাই দেবেন।
সিবিএস নিউজ ও ইউগোভ পুরো যুক্তরাষ্ট্রে গত ১৪ থেকে ২১ মের মধ্যে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ১ হাজার ৪০২ জনের ওপর এ জরিপ চালায়। অ্যারিজোনা, মিশিগান, জর্জিয়া, নেভাডা, উত্তর ক্যারোলিনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে এ জরিপ চালানো হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ– নির্বাচনের আগে তিনি পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলকে মুখ বন্ধ রাখতে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন। আদালতে স্টর্মিও সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের পুরো বিবরণ তুলে ধরেন; যা এতটাই বিব্রতকর ছিল যে এজলাসে বিচারক তাঁকে বারবার থামিয়ে দেন। তবে ট্রাম্প ও তাঁর আইনজীবীরা বলছেন, স্টর্মি এগুলো বানিয়ে বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের অপরাধে বিচারের মুখোমুখি হওয়া প্রথম কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। টাইম অনলাইন জানায়, মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, আদালতে ফৌজদারি অপরাধের বিচারকাজ চলা সত্ত্বেও একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রার্থিতা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হবে না। তবে নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর হয়তো জেল হতে পারে। আবার সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ায় এবং প্রথমবারের মতো এ ধরনের অপরাধ করায় তাঁকে জেলে না-ও যাওয়া লাগতে পারে। তবে অর্থদণ্ড দিতে হতে পারে।
ভাষণ দিতে গিয়ে অপমানিত ট্রাম্প
দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, ওয়াশিংটনের লিবার্টারিয়ান ন্যাশনাল কনভেনশন হলে গত শনিবার রাতে ভাষণ দেওয়ার সময় বিরল অপমানের মুখে পড়েন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় লোকজন চিৎকার করে গালাগাল শুরু করেন। ট্রাম্প বলেন, যদি জো বাইডেন আবারও ক্ষমতায় আসেন, তাহলে দেশের কোনো মানুষের স্বাধীনতা থাকবে না।
লিবার্টারিয়ান পার্টির নেতাকর্মীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে জোটে আসুন। আমরা একসঙ্গে কাজ করব। আমাদের অবশ্যই বিভাজিত না থেকে একসঙ্গে কাজ করা উচিত। এ সময় উপস্থিত দর্শক সারিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ রব ওঠে। লোকজন উচ্চস্বরে ট্রাম্পকে অপমান করে গালাগাল করতে থাকেন।